মহম্মদ ইউনুস।
শেষ আপডেট: 6th December 2024 09:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতনের ঘটনাকে ভারত বিরোধী প্রচার বলে চালাতে চাইছে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। পশ্চিমি দূনিয়ার ২৩টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন তিনি। ইউরোপিও ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদের সোমবার বৈঠকে ডেকেছেন ইউনুস।
দেশের হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ঘটনাকে বুধবার ইউনুস যখন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক অতিরঞ্জিত বলে বর্ণনা করছেন তখন ব্রিটেনের নিরাপত্তা পরামর্শ বাংলাদেশ সরকারের জন্য চরম অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ সরকার শুধু তাদের দেশের নাগরিকদের জন্যই নয়, গোটা বিশ্ববাসীর জন্য সতর্কবার্তা জারি করে বলে বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যে কোনও সময় যে কেউ সন্ত্রাসবাদীদের হামলার শিকার হতে পারেন। সেটা হাটে-বাজারে, পথেঘাটে, যে কোনও জায়গায় হতে পারেন। আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অমুসলিমদের তুলনামূলকভাবে বেশি।
সেদিন রাতেই হিন্দু নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সতর্ক করে বিবৃতি দেয় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রক। তার আগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন-সহ সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি নিয়েই সরব হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্টে একাধিক সাংসদ হিন্দু নিপীড়নের ঘটনায় মুখ খুলেছেন। সংসদদের চাপে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে হামালা থামাতে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৯ কিংবা ১০ ডিসেম্বর একদিনের সফরে ঢাকা যেতে পারেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। ফরেন অফিস কনসাল্টেশন বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। যদিও নয়াদিল্লি এখনও অবধি সরকারিভাবে ওই সফরের কথা জানায়নি। তবে বাংলাদেশ সরকার সফরের খুঁটিনাটি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ভারতের বিদেশ সচিবের মূল বৈঠকটি হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে। পাশাপাশি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা মিশ্রির। ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে শামিল হচ্ছে দুই দেশ। যদিও ইউনুস সরকারের গত চারমাসে দু-দেশের তিনটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক করেছে।
ইউনুস সরকার চাইছে ভারতে বিদেশ সচিব ঢাকায় থাকাকালে অন্য দেশগুলি যাতে বাংলাদেশ নিয়ে মুখ না খোলে। সেই কারণে ৯ ডিসেম্বর ভারতের বিদেশ সচিবের ঢাকা সফরের দিনেই ইউরোপিও ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিকে আলোচনায় ডেকেছেন ইউনুস।