শেষ আপডেট: 19th August 2023 12:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হিন্দু শাস্ত্রমতে পরকীয়া (অ্যাডালটরি) হল ‘স্ত্রীসংগ্রহণ’ (Adultery)। শ্রুতি, স্মৃতিশাস্ত্র, পুরাণ ও দর্শনে পরকীয়া সম্পর্কে অনেক রকম মত। কোথাও তাকে বলা হয়েছে জঘন্য অপরাধ, আবার কোথাও পরকীয়া নমনীয়। শাস্ত্র যাই বলুক, সাধারণের সমাজে পরকীয়া মানেই হল 'চিটিং'। নিজের স্ত্রী বা স্বামীকে ঠকিয়ে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। তা এই পরকীয়া নিয়ে যতই ছুঁতমার্গ থাকুক না কেন, যুগ যুগ ধরেই পরকীয়া বহাল তবিয়তেই টিকে আছে। সামাজিক সম্মান, নৈতিকতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে রীতিমতো ঝুঁকি নিয়েই 'চিটিং' করতে মন চায়। চোরাগোপ্তা পরকীয়ার নাকি আলাদা আনন্দ। শিরায় শিরায় শিহরণ। সোজা কথায়, সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে ঠকানোর এই যে ইচ্ছা বা প্রবণতা, সেটা কিন্তু ব্রেনেরই কারসাজিতে হয়। পরকীয়া ঠিক না ভুল, সে আলোচনা না হয় পরেই হবে, তবে এর গোড়ার কারণ হল হরমোনের (hormone) খেলা।
বুঝিয়ে বলা যাক। যা নিয়ে লুকোছাপা বেশি তাতেই বেশি জড়িয়ে পড়ার ইচ্ছা জাগে মানুষের। যে কাজে যত বেশি ঝুঁকি, সেই কাজ করতেই মন চায়। এই যে পরকীয়া করার মধ্যে যে শিরায় শিরায় শিহরণ জাগে, তার কারণ হল শরীরের দুটো হরমোন। ওই জোড়া হরমোনই যত নষ্টের গোড়া। এই হরমোন (hormone) জোড়া যদি বেশি বের হতে থাকে, তাহলেই সেইসব ঝুঁকির কাজ করতে ইচ্ছা জাগে যাকে সমাজের লগবুকে নষ্টামি, ঠকানো বা অপরাধ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ও টেস্কাস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মাথা ঘামিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন, আমাদের শরীরের দু’টি হরমোন (hormone) ডোপামিন এবং ভ্যাসোপ্রেসিন চিটিং করার প্রবণতার অন্যতম দুই কারণ। ম্যারিটাল অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপি নামের একটি জার্নাল এর আগেও ওই দুই 'দুষ্টু' হরমোনের কথা বলেছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৫৭% পুরুষ এবং ৫৪% মার্কিন মহিলারা জানান জীবনে অন্তত একবার পার্টনারকে ঠকিয়ে অন্য কারও শয্যাসঙ্গী বা সঙ্গিনী হয়েছেন। মনোবিদরা ব্যভিচারের কারণ হিসেবে বহু মানসিক ও পারিপার্শ্বিক কারণকে দায়ী করলেও বিজ্ঞানীরা কিন্তু বলছেন, প্রেমে পড়া হোক বা পরকীয়া, সবই কিন্তু পিটুইটারি গ্রন্থিরই খেলা। হরমোনের বেশি বা কমেই চিটিং করার সাধ জাগে।
টেস্টোস্টেরন হরমোনও (hormone) কম যায় না। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, টেস্টোস্টেরনের মাত্রা যদি বেড়ে যায় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। তখন আর ভয়টা কাজই করে না। মনে মনে বিশাল সাহস জন্মায়। লোক ঠকিয়েও মনে হয় ধরা পড়ব না। এমনকী নিজেকে বাঁচানোর নানারকম ফন্দি-ফিকিরও নাকি মাথায় চলে আসে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডোপামিনের জন্য মোট ২০০ রকমের রিসেপটার জিন আছে। ডোপামিন মস্তিষ্কে যৌন তৃপ্তি তৈরি করে। যাদের শরীরে ডোপামিন রিসেপটর জিনের সংখ্যা যত বেশি, তাদের মধ্যে ব্যভিচারের প্রবণতাও তত বেশি হয়। আবার ভ্যাসোপ্রেসিন নামের হরমোন বেশি নির্গত হলে তখন চিটিং করার ইচ্ছা জাগে। আর সেই সঙ্গে যদি টেস্টোস্টেরন মিলে যায়, তাহলে সবদিক দিয়েই সুবিধা। পরকীয়া করার ইচ্ছা ও সাহস দুটোই বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: ইলিশ-কাতলা-পটল চিংড়িতে সাজিয়ে দেবীর ভোগ, মনসা পুজো জমজমাট বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে