শেষ আপডেট: 3rd July 2022 12:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিরিয়ানি! শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আবেগ, প্রেম, ভালোবাসা। শুধু খাবার নয়, বিরিয়ানি হল মানুষের কাছে এমন একটা জিনিস যার কাছে সবকিছুই ফিকে হয়ে যায়। পারস্যে প্রথম এই বিরিয়ানির (Biriyani) জন্ম, তারপর মোঘলদের হাত ধরে ভারতে পা দেয় অতি সুস্বাদু খাবারটি। হু হু করে বাড়তে থাকে বিরিয়ানির জনপ্রিয়তা। খাবারের সাম্রাজ্যে সেই রাজা!
শুধু বাঙালি নয়, ভারতবর্ষ জুড়ে বিরিয়ানি প্রেমীদের সংখ্যা প্রচুর। বিশ্বের চিত্রটা আরও বৃহৎ। বিশ্বজুড়ে এই খাবারের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে প্রথমবার পালিত হচ্ছে বিরিয়ানি দিবস (World Biryani Day 2022)। ৩ জুন, রবিবার তাই ঘরে হোক বা বাইরে একবার বিরিয়ানি টেস্ট করতেই হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
মন খারাপ হোক, বা খুশি, বিয়ে হোক বা অন্নপ্রাশন, কিংবা সামান্য আড্ডা সবেতেই আলো করে থাকে এই নামটা। হাজার খাবারের ভিড়ে এক ঝটকায় চিনে ফেলা যায় তাকে। সর্বভারতীয় এক চাল প্রস্তুতকারী সংস্থা বিশ্বজুড়ে এই দিবস পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। কাছের সম্পর্ককে আরও ভালো করে পরখ করার জন্যই এই ভাবনা।
আট হোক বা আশি, বিরায়ানি যে সকলের পছন্দের তালিকায় থাকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাড়ায় পাড়ায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠে বিরিয়ানির দোকান। দু'পা এগোলেই চোখে পড়ে লাল কাপড়ে মোড়া এক বিশাল হাঁড়ি। খাদ্য প্রেমীদের প্রিয় ঠিকানা। এত গুচ্ছ গুচ্ছ দোকানের পরেও কেউই লোকসান করেন না। যা থেকে বুঝে নেওয়া খুব কঠিন নয় যে, বিরিয়ানির চাহিদা কেমন।
আলু, চিকেন, মটন, এগ, কিংবা ফিস বিরিয়ানি--- তালিকা বেশ বড়। এ বলে আমায় দেখ ও বলে আমায় দেখ। এই বিরিয়ানির ইতিহাসের পাতায় একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। জিভে জল আনা এই স্বাদের খাবার ছিল মূলত সেনাবাহিনীর খাবার! কারণ, সেনা ছাউনি এই রান্না করা ছিল খুবই সহজ একটি বিষয়। বিশাল হাঁড়িতে একসঙ্গে চাল, মাংস চাপিয়ে দিলেই রান্না শেষ। ধোঁয়া ওঠা গরম বিরিয়ানির স্বাদে মজে থাকতেন সৈন্যরা। কথিত গল্প আছে, মুঘল সেনাবাহিনীর হেঁসেলে ঢুকে মমতাজ মুঘল বাবুর্চিকে সেনাবাহিনীর জন্য ভাত, মাংস, মশলা সহযোগে এক সুস্বাদু খাবার তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই থেকেই পথ শুরু বিরিয়ানির।
এঁদের সাহায্যেই ভারত দখল করেছিল বিরিয়ানি, ভিনদেশ থেকে এসে
সে যাই হোক, দিনে দিনে এই বিরিয়ানির স্বাদ পাল্টেছে। এসেছে নতুন নতুন রেসিপি। যা এই খাদ্যবস্তুকে খাদ্য প্রেমীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সেই বিরিয়ানি দিবসে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতের সাতটি সুস্বাদু বিরিয়ানির রেসিপি---
কাশ্মীরি স্টাইলের বিরিয়ানি
এই বিরিয়ানির ইউএসপিই হল এই বিরিয়ানিতে মটনের টুকরোটি খুবই নরম হয়। কেওড়া জল ও জাফরান দিয়ে তৈরি মটনের স্বাদ সত্যিই অতুলনীয়। কাশ্মীরি স্টাইলে তৈরি করা এই বিরিয়ানি আপনি যে উপভোগ করবেন তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
মটন মান্ডি বিরিয়ানি
যে কোন অনুষ্ঠানে এই বিরিয়ানির প্রচলন আছে ভারতে। এই বিরিয়ানিতে মটনটি একটি বিশেষ উপায়ে প্রস্তুত করা হয়। যা আপনার ডিসকে আরও সুস্বাদু করে তুলবে। মটনের প্রতি পরতে লেগে থাকবে সেই স্বাদ।
কলকাতা চিকেন বিরিয়ানি
কলকাতার বিরিয়ানি মানেই তাতে থাকবে একটি বড় সাইজের আলু। যা কলকাতা বিরিয়ানির অঙ্গ বলা চলে। অন্যান্য সব বিরিয়ানি থেকে সতন্ত্র করেছে এই একটি মাত্র জিনিস। আর থাকবে বাঙালি বিরিয়ানি মশলা, যা সব স্বাদকে ছাপিয়ে যাবে।
হায়দরাবাদি দম বিরিয়ানি
আমরা ভাবতে পারব না বিরিয়ানির তালিকায় যদি এই স্বাদটা না থাকে। পুরো রেসিপিটি দমে হয়, আর চিকেন গুলোকে হাঁড়ির একেবারে নিচে রাখা হয়। যা হাল্কা আঁচে ধীরে ধীরে তৈরি হয়ে বিরিয়ানিকে আরও সুস্বাদু করে তোলে।
মালাবার ফিস বিরিয়ানি
আপনি যদি দক্ষিণ ভারতের রান্না পছন্দ করেন তবে অবশ্যই এই বিরিয়ানিটি চেকে দেখতে পারেন। মূলত দক্ষিণ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার এটি। শেষপাতে এক বাটি রায়তা নিতে পারেন তো যা এই বিরিয়ানিকে আলাদা মাত্রা দেয়।
কাঠাল বিরিয়ানি
আমিষ বা নিরামিষ উভয়ের কাছেই এই বিরিয়ানি খুব জনপ্রিয়। বিরিয়ানির তালিকায় এটি নয়া সংযোজন। সুগন্ধি চালের সঙ্গে এই বিরিয়ানি তৈরি করুন বাড়িতেই। মনেই হবে না যে বিরিয়ানিতে মাংস নেই।
ভেজ দম বিরিয়ানি
নিরামিষভোজীদের জন্য এই বিরিয়ানি খুবই সুস্বাদু উপাদান। তবে আমিষভোজীরাও সমান তালে এই বিরিয়ানি উপভোগ করে থাকে। বিভিন্ন সবজি দিয়ে তৈরি হয় এটি। যা একদিকে যেমন পুষ্টিকর, অন্যদিকে তেমনই সুস্বাদু।
তাহলে, বিরিয়ানি দিবসে আপনার খাবার তালিকায় থাকছে কোন বিরিয়ানিটি?
বিরিয়ানির হাঁড়ির গায়ে কেন জড়ানো থাকে লাল কাপড়? জানেন সেই রঙের রহস্য