দ্য ওয়াল ব্যুরো : গত একবছরে কোভিড অতিমহামারীর জেরে রীতিমতো চাপের মুখে পড়েছে ভারতের অর্থনীতি। তাও বিশ্ব ব্যাঙ্ক মনে করে, ২০২১ সালে দেশের অর্থনীতির বিকাশ হবে ৮.৩ শতাংশ হারে। তবে ২০২২ সালে বিকাশের সম্ভাবনা আর একটু কম দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাঙ্ক গ্লোবাল ইকনমিক প্রসপেক্টস নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, আগামী বছরে ভারতের অর্থনীতি ৭.৫ শতাংশ হারে বিকশিত হতে পারে। ২০২৩ সালে বিকশিত হতে পারে ৬.৫ শতাংশ হারে।
২০১৯ সালে ভারতের অর্থনীতি বিকশিত হয়েছিল চার শতাংশ হারে। ২০২০ সালে আশঙ্কা করা হয়েছিল, কোভিডের ধাক্কায় অর্থনীতির সংকোচন হবে ৭.৩ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতি বিকশিত হবে ৫.৬ শতাংশ হারে। গত ৮০ বছরে আর কখনও মন্দার পরে অর্থনীতি এত বেশি হারে বিকশিত হয়নি।
এরপরে বলা হয়েছে, ভারত সরকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিকাঠামো, গ্রামোন্নয়ন ও স্বাস্থ্যে এখন অনেক বেশি ব্যয় করছে সরকার। তার ওপরে ম্যানুফ্যাকচারিং ও পরিষেবা ক্ষেত্রও ঘুরে দাঁড়িয়েছে দ্রুত।
মে মাসের শেষে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানায়, কোভিড অতিমহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ আসায় দেশের অর্থনীতিতে একপ্রকার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে স্বল্পমেয়াদে অর্থনীতির বিকাশ ব্যাহত হতে পারে। বেসরকারি ক্ষেত্রে চাহিদা বাড়লে তবেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।
সেই সঙ্গে অবশ্য আশার কথাও শুনিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। তার বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গতবছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছিল, দ্বিতীয় ওয়েভে ততদূর হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বলেছে, কোভিড পরবর্তী সময়ে জিডিপি-র বিকাশের জন্য বিপুল অর্থ বিনিয়োগ হওয়া চাই। কত তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে, তার ওপরে নির্ভর করছে অনেক কিছু। সাধারণত কোনও সংকটের পরে বাজারে যদি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, তাহলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তাছাড়া যদি বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়, তাহলেও অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে বহু সংখ্যক চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়। তখন বাজারে নানা পণ্যের চাহিদা বাড়ে। অর্থাৎ পুঁজি বিনিয়োগও পরোক্ষে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিবৃতি দিয়ে বলে, "দেশ জুড়ে কোভিড ১৯-এর অতিমারীর মাঝেও ভারতের অর্থনীতি চাঙ্গা রয়েছে, এটা লক্ষ করার মতো বিষয়।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "মার্চ মাসে দেশের অর্থনীতির অনেকটাই উন্নয়ন হয়েছে। এমনকি অতিমহামারীর পূর্ববর্তী সময়কেও তা ছাপিয়ে গেছে।"