ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ার (এসআইআর) ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক কিছু নির্দেশিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তৃণমূলের।
ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 1 July 2025 15:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভোটার তালিকা (Voter List) সংশোধন প্রক্রিয়ার (এসআইআর) ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (Election commission) সাম্প্রতিক কিছু নির্দেশিকার তীব্র বিরোধিতা জানিয়ে মঙ্গলবার দিল্লিতে কমিশনের সদর দফতরে হাজির হলেন তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চির বরাইক এবং রাজ্যের তিন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও অরূপ বিশ্বাস।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণ বলেন, “নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এসআইআর-এর লক্ষ্য কোনও যোগ্য ভোটারকে বাদ না দেওয়া। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, কিছু নির্দেশিকা এমন যে, ভোটারদের যোগ্যতা যাচাইয়ের নামে তাঁদের বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আমাদের দাবি, ২০২৪সালের ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করে কাজ হওয়া উচিত।”
কল্যাণ আরও জানান, মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও হরিয়ানার মতো রাজ্যে নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকায় হঠাৎ বিপুল সংখ্যক নাম যোগ করার ঘটনা ঘটেছে। বাংলার ক্ষেত্রেও যাতে এমন না হয়, সেই বিষয়ে কমিশনকে বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। তাঁর অভিযোগ, “৫০-৬০ বছর বয়সি ভোটারের নাম হঠাৎ তালিকায় যুক্ত হওয়ার ঘটনাগুলি আমাদের সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।”
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে জন্ম শংসাপত্র চাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভোটার তালিকাভুক্তদের এই ধরনের নথি জমা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে আমরা কমিশনের কাছে নিজেদের আপত্তি জানিয়েছি।”
তৃণমূলের দাবি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটিতে প্রায় ৪৫০০ ভুয়ো ভোটারের নাম যুক্ত করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা রোধে কমিশনের আরও কঠোর হওয়া উচিত বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আধার এবং ভোটার কার্ড সংযোগের প্রস্তাবেও আপত্তি জানিয়েছে দল।
কমিশনের কাছে ফিরহাদ আরও প্রস্তাব করেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথের ভিতরে প্রবেশ করতে পারলেও, রাজ্য পুলিশেরও সমান উপস্থিতি থাকা উচিত। “ভোটারদের প্রভাবিত করার আশঙ্কা থাকলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকাও নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত,” বলেন তিনি।
নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, কমিশনের অনুমতি ছাড়া রাজ্যপাল যেন কোনও রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশ নিতে না পারেন।
নির্বাচন কমিশন এখনও এই সব দাবির বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তৃণমূলের এই সক্রিয় পদক্ষেপে ভোটের আগে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।