শেষ আপডেট: 6th February 2025 17:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে ভিতপুজো করে শুরু হয়ে গেল কাজ। ভিতপুজোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ প্রশাসনের কর্তারা।
বস্তুত, বীরভূমে যখন এই ভিতপুজো হচ্ছে তখন বিশ্ববাণিজ্য সম্মেলনে চাঁদের হাট। বুধবার ওই মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, দেউচা পাচামিতে (Deucha Pachami) আগামিকাল থেকেই কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।
এদিন জেলাশাসক জানান, কয়লা উত্তোলনের পরিকাঠামো তৈরি। এবার থেকে কাজে যুক্ত করা হবে স্থানীয়দের। জেলাশাসক এও বলেন, দেউচা পাচামির প্রকল্প নিয়ে এলাকার মানুষ খুব খুশি।
বুধবার বিজিবিএসের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'দেউচা পাচামিতে আগামী কাল থেকেই কয়লা উত্তোলন শুরু হবে। এখানে যা কয়লা রয়েছে, তাতে আগামী ১০০ বছর বিদ্যুতের খামতি থাকবে না রাজ্যে। এখানে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। যদি কোনও শিল্প সংস্থা এখানে বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে আমার মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
প্রসঙ্গত, দেউচা পাচামি নিয়ে বহু দিন ধরেই ঝামেলা চলছে পশ্চিমবঙ্গে। ১৯৯৩-৯৫ সালে, বাম শাসনের আমলে দেউচা পাচামি-সহ তিনটি কয়লা ব্লক বণ্টন করা হয়েছিল আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপকে। তবে সরকারি তরফে ব্লক পেলেও, উত্তোলনের পরিবেশ গড়ে তোলা যায়নি বহু বছর ধরে। পরবর্তীকালে এই দেউচা পাচামি কয়লা খনি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভীষণই আগ্রহী হয়ে ওঠেন। শিল্প মহল সূত্রে শোনা যায়, কেবল গোয়েঙ্কা নয়, ওই খনি নিয়ে আগ্রহ রয়েছে আদানি শিল্পগোষ্ঠীরও।
বিস্তর টানাপড়েনের পরে অবশেষে স্থানীয়দের রোষ প্রশমিত করে, গত বছর থেকেই ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া শুরু হয় জমিদাতাদের এর পরে গত মাসেই নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দেউচা পাচামি প্রকল্পের কাজ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভরা বৈঠকে জেলাশাসকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, ‘দেউচা পাচামির জন্য যখন জমি নেওয়া হল কেন খাপছাড়া ভাবে নেওয়া হল? কেন কনটিগুইটি দেখা হল না?'
মুখ্যমন্ত্রীর ওই ধমকের পরই নড়ে বসে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তারা। সশরীরে বোলপুরে পৌঁছন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। সেখান থেকে মহম্মদবাজার বিডিও অফিসে পৌঁছে বীরভূমের জেলাশাসক, জেলা সভাপতি এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যসচিব এবং ডিজি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চাকরি, পুনর্বাসন-সহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন দেউচা পাচামি প্রকল্প লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। তবে এদিন জেলাশাসক স্পষ্ট করে দেন, দেউচা পাচামির প্রকল্প নিয়ে এলাকার মানুষ খুব খুশি। পুনর্বাসন বা চাকরি নিয়ে তাদের কোনও অসন্তোষ নেই।