শেষ আপডেট: 19th June 2020 04:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশেষ ভাবে সক্ষম বিমানযাত্রীর শৌচালয় ব্যবহার করা নিয়ে চরম অশান্তির জেরে আমেরিকান বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল অমানবিক আচরণের। বিমান সংস্থা 'চিপওএয়ার'-এর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মার্কিন মহিলা। ট্যামি স্যু স্পিয়ার্স নামের ওই মহিলার অভিযোগ, তিনি চোখে দেখতে পান না। তাঁর পায়ে সমস্যা রয়েছে, ভাল করে হাঁটতেও পারেন না। তার পরেও শৌচালয়ে যাওয়ার প্রয়োজনে তাঁকে হুইলচেয়ার দেওয়া হয়নি। টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শৌচালয়ে। অভিযুক্ত ওই মার্কিন বিমান সংস্থা অবশ্য দাবি করেছে, তারা যাত্রীদের যত্ন ও স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে পূর্ণমাত্রায় নজর রাখে। কারও কোনও তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই তাদের সঙ্গে। তারা এ নিয়ে আলোচনা করবেন ওই মহিলার পরিবারের সঙ্গে। সংস্থার তরফের মুখপাত্র ক্যাথি মুর এ-ও জানান, টিকিট বুক করার সময়ে পায়ের সমস্যার কথা বা হুইলচেয়ারের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করেননি ট্যামি স্যু স্পিয়ার্স। সেই কারণেই প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। তাঁর কথায়, "ওঁর সঙ্গে যা হয়েছে তার জন্য আমরা সহানুভূতিশীল, কিন্তু আমরা জানতামই না আমাদের কোনও যাত্রীর বিশেষ প্রয়োজন হতে পারে হুইলচেয়ারের। তাই আগাম ব্যবস্থা ছিল না।" ট্যামি স্যু স্পিয়ার্সের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর ৫১ বছর বয়সি মক্কেল চোখে দেখতে পান না। তার উপর সম্প্রতি দু-দু'টি অস্ত্রোপচার হয়েছে পায়ে। হাঁটুর তলা থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে বাঁ পা। তিনি আমেরিকার ইদোহোর জেরোম শহর থেকে তাঁর বোনের বাড়ি রিচমন্ডে যাওয়ার জন্য বিমান বুক করেছিলেন। তাঁর যাতে অসুবিধা না হয় এই অবস্থায়, তাই আমেরিকার সেরা এয়ারলাইন্সের উপরেই ভরসা করেছিল পরিবার। কিন্তু অত্যন্ত অমানবিকতার মুখে পড়েছেন তিনি। ট্যামির পরিবারের দাবি, তাঁরা টিকিট বুক করার সময়ে সংস্থাকে বারবার করে বলেছিলেন, ট্যামি একা ট্র্যাভেল করছেন, তাঁর এই এই সমস্যা আছে। হুইলচেয়ার প্রয়োজন হবে এয়ারপোর্টে। প্রয়োজন হবে বিমানের ভিতরে চলাফেরা করার বিশেষ আইল হুইলচেয়ারও। কিন্তু অভিযোগ, এয়ারপোর্টে হুইলচেয়ার মিললেও, বিমানে তা তোলা হয়নি। ফলে এক ঘণ্টার যাত্রাপথে শৌচালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হলে তিনি বিমান কর্মীদের জানালে তাঁরা বলে, "এই অবস্থাতেই আপনাকে যেতে হবে কোনও ভাবে, নইলে অপেক্ষা করতে হবে অবতরণ পর্যন্ত।" অপেক্ষা করার মতো পরিস্থিতি না হওয়ায়, বিমানকর্মীদের সাহায্য নিয়ে তিনি কোনও রকমে শৌচালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁদের দক্ষতা ও সংবেদনশীলতার অভাব ছিল। তাই ট্যামিকে তাঁরা "মাটিতে ফেলে, ধাক্কা দিয়ে, টেনেহিঁচড়ে" শৌচালয়ে নিয়ে যান। পড়ে গিয়ে আঘাতও পান তিনি। শুধু তাই নয়, ট্যামির আইনজীবী আরও জানান, এই অবস্থায় কোনও রকমে তাঁর মক্কেল শৌচালয়ে পৌঁছলেও, তাঁকে দরজা বন্ধ করতে বারণ করেন বিমানকর্মীরা। ফার্স্ট ক্লাস কেবিন থেকে শৌচালয়ের ভিতরটা দেখা যাচ্ছিল, যা অত্যন্ত অপমানজনক ও অবমাননাকর বলেই দাবি তাঁর। শুধু তাই নয়, রিচমন্ডে পৌঁছে সংস্থার তরফে একটি আলাদা ঘরে নিয়ে গিয়ে জেরাও করা হয়েছে তাঁর মক্কেলকে, মামলায় এমনটাই জানিয়েছেন আইনজীবী।