Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 17 January 2024 12:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়েছিলেন ইডি অফিসাররা। শেষমেশ তাঁরা মারধর খেয়ে ফিরেছেন, কিন্তু শাহজাহান ফেরার। কলকাতা হাইকোর্টে এ নিয়ে মামলা চলছে। শাহজাহানকে খোঁজার দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আর্জি পেশ হয়েছে উচ্চ আদালতে। সেই দাবি খণ্ডন করতে গিয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বুধবার যুক্তি দিলেন, সিবিআই সর্বরোগহর, এমন ধারণাই ভ্রান্ত। তাঁর কথায়, সিবিআই কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল উদ্ধার করতে পেরেছে? তাহলে? এ রাজ্যে বহু মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি। গত তিন দশকের যদি রেকর্ড দেখা যায় তাহলে তাদের ঝুলিতে ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই নেই। দুই একটা বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া রাজ্য পুলিশের গায়ে কিন্তু কোন ব্যর্থতার ছাপ নেই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার উদ্ধারে সিবিআইয়ের ব্যর্থতার সঙ্গে শাহজাহানকে খোঁজার কোনও মিল রয়েছে কিনা তা বিচারপতিরা বিচার করে দেখবেন। বুধবার বিকেলে এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মারধর ও শাহজাহানের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে রাজ্য পুলিশ এখনও পর্যন্ত যে তদন্ত করেছে তার রিপোর্ট এদিন আদালতে পেশ করেছে রাজ্য সরকার। পূর্ণাঙ্গ কেস ডায়েরিও জমা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকার এদিন কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছে, শাহজাহানের বাড়ি এবং সন্দেশখালি বাজার এলাকায় মোট ১০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
রাজ্যের তরফে জবাবে বলা হয়েছে, শাহজাহানের খোঁজ এখনও চলছে। ৩০৭ তথা খুনের ধারা এবং ডাকাতির ধারায় মামলা করা হয়েছে।
কিন্তু রাজ্যের এই সব যুক্তি শোনার পাশাপাশি আদালত সিবিআইয়ের কাছে চার জন পুলিশ সুপার র্যাঙ্কের অফিসারের নাম চেয়েছে। অর্থাৎ শেষমেশ যদি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়, তাহলে কাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে তা খতিয়ে দেখতে চেয়েছে আদালত।
সন্দেশখালির ঘটনায় গোড়া থেকে পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগ করেছে ইডি। এ ব্যাপারে বিবৃতি দিয়ে ইডি এও জানিয়েছে, ওই দিন রাতে শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতারের আগে বিকেলে বনগাঁর পুলিশ সুপারকে ফোন করে বাড়তি নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ব্যবস্থাও পুলিশ করেনি।
ইডির আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, শাহজাহান কি বেআইনি লেনদেন মামলায় অভিযুক্ত? আপনারা কি ওঁকে গ্রেফতার করতে পারেন? বিচারপতি আরও বলেন, এই মামলায় ইডি তদন্ত করছে। এর পর আর একটি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তদন্তের ভার দিলে কি অসুবিধা হতে পারে?
জবাবে ইডির আইনজীবী জানিয়েছেন, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত হলেন শাহজাহান শেখ। বেআইনি টাকা লেনদেনে তাঁর হাত আছে। কালো টাকা সাদা করত শেখ শাজাহান। সেই জন্য তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডি অফিসাররা। কিন্তু অফিসারদের চোখে ধুলো দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।
ইডির আইনজীবী আরও বলেন, বলা হচ্ছে যে ওই ঘটনার পর ইডির অফিসাররা খাবার খেয়েছেন। কিন্তু সেদিন যে ঘটনা ঘটেছিল, তারপর কেউ খাবার খেতে যেতে পারেন?
এ কথা বলে বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ আদালতে পেশ করেছেন ইডির আইনজীবী। বুধবার বিকেল ৪টেয় এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Advertisement
Advertisement