শেষ আপডেট: 12th March 2025 22:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশের উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে প্রাথমিক তালিকায় নাম উঠেও চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিজেপি নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের প্রশ্নের উত্তরে সংসদে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বাদ পড়ার কারণ হিসেবে সুকান্তর দাবি, রাজ্যর গাফিলতিতেই যাদবপুর দেশের সেরা তালিকা থেকে বাদ পড়ল। সংসদে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রীর দাবি, যাদবপুরকে উৎকর্ষকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাজ্য প্রথমে ৩,২৯৯ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট
বরাদ্দ করেছিল। পরে তা কমিয়ে মাত্র ৬০৬ কোটি করে।
সুকান্তর আরও দাবি, এত কম বাজেটে কোনও প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের সেরার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়, যা কমিশন অনুমোদন দেয়।
তৎপর্যপূর্ণভাবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হামলার অভিযোগ এবং তার গাড়ির ধাক্কায় দুই ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে গত ১ মার্চ থেকে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, রাজনৈতিক কারণেই বিশেষ এই সময়ে যাদবপুরের বাদ পড়ার প্রসঙ্গটি সামনে আনা হল। তবে এ ব্যাপারে রাজ্যের প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। রাজ্যের প্রতিক্রিয়া সামনে এলে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ কে কেন্দ্র করে যাদবপুর ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে শোরগোল তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
দেশের কিছু নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছিল কেন্দ্র। সেই তালিকায় নাম ছিল যাদবপুরেরও। চূড়ান্ত তালিকা থেকে সেটি বাদ পড়ে। কেন্দ্রের বক্তব্য অনুযায়ী, রাজ্য সরকারের বাজেট সংক্রান্ত সিদ্ধান্তই এর মূল কারণ।
এই ইস্যুতে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য বলেন, “প্রথমে ৩,২৯৯ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছিল, যাতে কেন্দ্র হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অনুদান দিতে রাজি ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার তাদের অংশীদারি তহবিল দিতে অস্বীকার করায় প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায়।” তাঁর দাবি, প্রস্তাবিত বাজেট ধাপে ধাপে কমে ১,০১৫ কোটি টাকা হয় এবং শেষ পর্যন্ত তা আরও নেমে আসে ৬০৬ কোটিতে।
পাল্টা হিসেবে শাসকদল টেনে আনছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পর থেকে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্র বরাদ্দ আটকে রেখেছে বলে রাজ্যের অভিযোগ। ওই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে শাসক দলের নেতারা বলছেন, বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের বরাদ্দ টুকুও দিচ্ছে না, উল্টে জিএসটির নাম করে কর বাবদও সব টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে যারা নিজেরাই রাজ্যের প্রাপ্য টাকা দেয় না তাদের মুখে বড় বড় কথা মানায় না।
প্রসঙ্গত এদিনই বিধানসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় আর্থিক সংকটের অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি, এ কারণেই জিএসটি বাবদ বাংলার প্রাপ্য টাকাও মোদী সরকার দিচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা থেকে যাদবপুরের নাম বাদ পড়ায়, রাজনীতির খোলাজল যে আরও ঘোলা হবে তা বলাই বাহুল।