শেষ আপডেট: 13th August 2024 18:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী রবিবার পর্যন্ত তদন্তকারীদের সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলায় সিবিআই তদন্তেরই নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে কলকাতা পুলিশকে মামলার যাবতীয় কাগজপত্র কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ে সার্বিকভাবে খুশি সিপিএম নেতৃত্ব, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তবে আন্দোলন থেকে তাঁরা এখনই সরে আসছেন বলে কোনও ইঙ্গিত দেননি।
তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার মিছিল করে সিপিএম, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্ত দিয়েছে জানার পর সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় দ্য ওয়ালকে বলেন, ''ঠিকই আছে। দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্ত করে শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু কাকে শাস্তি দেবেন, সেটাই বড় প্রশ্ন।'' অন্য আরেক নেত্রী দিপ্সীতা ধর বলেন, ''নতুন করে কিছু বলার নেই। আদালতের নির্দেশে নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই সেটা সবচেয়ে ভাল হবে। সিবিআই হোক সিআইডি, আমার বোন, সহপাঠীর ধর্ষক-খুনিরা শাস্তি পাক, আর যারা তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে তাদেরও শাস্তি হোক।''
এদিকে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের রায় নিয়ে ইতিবাচক। সংগঠনের তরফে ভাস্কর ঘোষ বলেন, ''রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ যে সব পুলিশকর্তারা আছেন তাঁদের দ্বারা নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয়। সে জায়গা থেকে সিবিআই ছাড়া উপায় ছিল না। তবে তারাও কোনও পক্ষ না নিয়ে সঠিক তদন্ত করুক, এটাই চাই। আরও অনেক মামলায় সিবিআই তদন্ত করছে। সেগুলির মতো এই মামলার তদন্তও যেন মাঝপাথে হারিয়ে না যায়, দোষীরা কঠোর শাস্তি পাক।'' তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনিও খোঁচা দিতে ছাড়েননি।
ভাস্করের দাবি, দুটি ভাগ রয়েছে রাজ্য পুলিশের মধ্যে। এক, যারা উচ্চপদস্থ কর্তা, কাটমানি শিল্প চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, কয়েকশো কোটি টাকার মালিক। আর দুই, যারা জ্বালা-যন্ত্রণায় আছেন, তাঁরা চান এই ঘটনার দ্রুত, নিরপেক্ষ তদন্ত হোক, দোষীরা শাস্তি পাক। মঙ্গলবার বুদ্ধিজীবীদের একাংশও মিছিল করে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে। সেই মিছিলে সামিল ছিলেন অপর্ণা সেন, মীরাতুন নাহাররা।
প্রসঙ্গত, তদন্তে কলকাতা পুলিশের ভূমিকায় আদালত যে সন্তুষ্ট নয়, তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন মামলার শুনানিতে আরজিকরের মেডিক্যাল এবং কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। এরপরই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মৃতের পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আরজিকর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হলে নৃশংসভাবে খুন করা হয় মেডিক্যালের ছাত্রীকে। ওই ঘটনায় এদিন কলকাতা হাইকোর্টে মোট পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মৃতার পরিবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। হাইকোর্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকেই তদন্তের কাজ শুরু করবে সিবিআই।