শেষ আপডেট: 7th August 2022 04:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবার সন্ধ্যায় তোলপাড় কাণ্ড ঘটে গেছে কলকাতার (Kolkata Shootout) বুকে। পার্কস্ট্রিটে (Parkstreet) জাদুঘর চত্বরে আচমকাই এক সিআইএসএফ জওয়ান (CISF) এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। সিআইএসএফের একটি গাড়ি লক্ষ্য করেই গুলি চালিয়েছিল সে। তার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক জওয়ানের। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিসাধীন আরও একজন। কিন্তু শনিবার রাত থেকেই যে প্রশ্নটা ঘুরছে, তা হল কেন এভাবে হঠাৎ ‘ঘাতক’ হয়ে উঠল কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওই জওয়ান?
ঘাতক জওয়ানের নাম অক্ষয়কুমার মিশ্র, তার বাড়ি ওড়িশায়। সিআইএসএফের হেড কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিল সে। পুলিশ সূত্রে খবর, কিছুদিন আগেই তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। সেই কারণে কিছুদিন ছুটির আবেদন জানিয়েছিল অক্ষয়। কিন্তু তার সেই ছুটির আবেদন বাতিল হয়ে গেছে বলে খবর।
অনেকে বলছেন, সেই কারণেই ক্ষোভ জমেছিল অক্ষয়ের মনে। তবে শনিবার যে কাণ্ড সে ঘটিয়েছে তার পিছনে মূল কারণ এটাই কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কলকাত পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, কেন ওই জওয়ান এভাবে গুলি চালিয়েছে তা তদন্ত শেষ হলেই বলা যাবে।
এদিকে অক্ষয়ের গুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর যে জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে তাঁর নাম রঞ্জিত সারেঙ্গি। তাঁর বাড়িও ওড়িশায় বলে খবর। ফলে এই দুজনের মধ্যে আগে থেকে কোনও শত্রুতা ছিল কিনা, কর্মরত অবস্থায় দুজনের মধ্যে কোনও গোলমাল হয়েছিল কিনা সেদিকটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তের পরেই জানা যাবে অক্ষয়ের এমন আচরণের আসল কারণ।
শনিবার রাতে দেড়ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অপারেশনের পর অক্ষয়কুমার মিশ্র নামের ওই ঘাতক জওয়ানকে ধরেছে কলকাতা পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনারও।
পার্কস্ট্রিটে শনিবার সন্ধ্যায় প্রায় ১৫ রাউন্ড গুলি চলেছে বলে খবর। নিজের সার্ভিস রাইফেল দিয়েই আচমকা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে অক্ষয়। তারপর সিআইএসএফের ব্যারাকেই আত্মগোপন করেছিল সে। তার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল তখনও। ফলে কলকাতা পুলিশের বাহিনী বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে অপারেশনে নামে। মাইকের মাধ্যমে বাইরে থেকে প্রথমে অক্ষয়কে বোঝানো হয়, ফেলে দিতে বলা হয় অস্ত্র। পাল্টা সেও ভিতর থেকে পুলিশকে অস্ত্র ফেলতে বলে। আতঙ্ক, উতকণ্ঠায় কাটে টানটান প্রহর। অবশেষে ওই ব্যারাকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে দেয় পুলিশ, নিরস্ত্র করে পাকড়াও করা হয় জওয়ানকে।
পুলিশ যখন অক্ষয়কে ধরে গারিতে তুলেছিল, যখন সে গাড়ি যাচ্ছিল জাদুঘরের পাশ দিয়ে, তখন সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়তে দেখা গেছে অক্ষয়কে। তার চেহারার ভাবভঙ্গি দেখে মনে হয়েছে সে বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নয়।
আরও পড়ুন: পার্কস্ট্রিটের বন্দুকবাজকে ধরতে রুদ্ধশ্বাস অপারেশন লালবাজারের, উৎকণ্ঠার দেড়ঘণ্টা