শেষ আপডেট: 7th March 2025 19:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দাবি মতো 'তোলা' না দেওয়ায় মালদহে (Maldah) এক লরি চালককে ক্যাম্পে ঢুকিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তিন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে (Civic volunteer accused of beating lorry driver)। এও অভিযোগ যে মার মানে, প্রায় চোর পেটানোর মতো মারা হয়েছে ওই ট্রাক চালককে। আউটপোস্টের মধ্যে ঢুকিয়ে চৌকির উপর ফেলে পেটানো হয়েছে তাঁকে।
গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখেন ওই ট্রাক চালকের সহকর্মী। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ ও অসন্তোষ উগরে উঠেছে। এক শ্রেণির সিভিক পুলিশের বিরুদ্ধে দাদাগিরি, তোলা আদায়ের মতো অভিযোগ রয়েছেই। কিন্তু অনেক সময়ে দেখা যায়, শোনা কথার তুলনায় ভিডিওয় দেখা বাস্তব ছবি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে দেয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়। এই তিন সিভিকের অত্যাচারের ঘটনা সামগ্রিক ভাবে সিভিক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-অসন্তোষে অক্সিজেন যুগিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, সার্বিক এই প্রেক্ষাপটেই তিন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ক্লোজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথমে জেলা পুলিশ ঠিক করেছিল, তাদের শোকজ করা হবে। কিন্তু তার পরই জানিয়ে দেওয়া হয়, তিন জনকে ক্লোজ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আইজি উত্তরবঙ্গ রাজেশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ঘটনার কথা আমরা জানি। সিরিয়াস অভিযোগ রয়েছে। এসপি গোটা ব্যাপারটা দেখছেন। ওদের ক্লোজ করা হয়েছে। ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে।”
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনা থেকে আরজি কর—সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এমনকি কিছুদিন আগে দেখা যায়, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর পরিবারের সদস্যকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। সেই ঘটনা নিয়েও উদ্বেগে পড়েছিল নবান্ন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের থেকে সেদিনই রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
রুহুল আলি নামে ওই লরি চালকের অভিযোগ, উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থেকে লরিতে করে গরু নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরের মারাডানগি এলাকায় আসছিলেন তাঁরা। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেলা বাড়ি নাকা চেকপোস্টের সামনে গাড়িটি দাঁড় করান সিভিক ভলেন্টিয়াররা।
রহুল বলেন, "ওরা হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি বলি, ৫০০ টাকা নিন। এতেই ক্ষেপে গিয়ে লরি থেকে নামতে বলে। এরপরই কলার ধরে ক্যাম্পে ঢুকিয়ে মারধর করে।" তিনজন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই লরি চালক।
নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, "আরজি কর পরবর্তী সময়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। তারপরও জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে এই ধরনের জুলুমবাজির অভিযোগ রয়েছে। হতে পারে স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ও একাংশের বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ। ফলে শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, এর রাজনৈতিক সমাধানও জরুরি।"