শেষ আপডেট: 29th January 2025 22:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রজেক্টের কাজ করতে গিয়ে বিভাগীয় প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে বিয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের। সেই ছবি বুধবার সকাল থেকে ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভাইরাল ভিডিও নিয়ে মন্তব্যের শেষ নেই নেটিজেনদের। ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তে কলেজের তরফে ছুটিতে পাঠানো হয় ওই অধ্যাপিকাকে। সারাদিন চলে নানা জল্পনা। যদিও দিন শেষ হওয়ার আগেই মুখ খোলেন অধ্যাপিকা। সকলকে জানান সত্যিটা।
বুধবার ভাইরাল হয় নদিয়ার হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি (ম্যাকাউট)-এর একটি ভিডিও। যেখানে অধ্যাপিকার বিয়ে হতে দেখা যায়। বিয়ে করছেন প্রথম বর্ষের ছাত্র। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই না করেই ছড়িয়ে দেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই নিয়ে সকাল থেকে চুপ ছিলেন অধ্যাপিকা। বুধবার সন্ধের পরই ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করেন। গোটা ঘটনাটি তিনি বিশ্লেষণ করেন।
জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি আসলে নাটকের মুহূর্তের ক্লিপ। যা পর পর জুড়ে ভাইরাল করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'খুবই আশ্চর্যজনক ব্যাপার। একটা ড্রামা ক্লিপ এভাবে ভাইরাল হয়েছে। অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন এই ভিডিওর ব্যাপারে। এটা পার্ট অফ ড্রামা। আরও অনেক ভিডিও আছে, ডিপার্টমেন্টের। নাচ-গান। যেখানে পড়ুয়ারা নাচ গান করছেন। আমিও অংশগ্রহণ করি। অন্যান্য ফ্যাকাল্টিরাও করেন। সেসবও আছে। সেগুলো ভাইরাল না হয়ে একটা সাইকো ড্রামা থেকে কিছু অংশ ধরে ধরে ভাইরাল করা হল। এটা আশ্চর্যের আমার কাছে।'
কেন হল এমন হঠাৎ? কে করল এই কাজ? অধ্যাপিকার বক্তব্য, 'কে, কোন উদ্দেশে করল সেনিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। আশা করি কর্তৃপক্ষ যাচাই করবে। ওদের ওপর পুরো বিশ্বাস রয়েছে। কে করেছে, ওরাই যাচাই করে বের করুক। এটাই বলব, ভিডিওগুলো ভাইরাল হয়েছে আমি তো মানহানির মামলা করবই। কিন্তু একবারও কেউ ভাবছে না পড়ুয়াদের কেরিয়ার আছে।'
ছাত্রদের কেরিয়ারই তাঁর কাছে সবচেয়ে আগে। ছাত্রদেরকে নিজের আগে রেখে অধ্যাপিকার মত, 'আমি তো এগিয়ে গেছি। ওদের কথা ভাবা হচ্ছে না। ওদের কী হবে। আমি তো চাকরি করছি। আমার ব্যাকগ্রাউন্ডও লোকে জানে। রিসার্চ ব্যাকগ্রাউন্ড। সবাই জানে। এসব নিয়েই থাকি। আমি আমার স্টুডেন্টদেরও অনুপ্রেরণা জোগানোর চেষ্টা করি, রিসার্চ করার। এখনও করে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়া সকলেই জানে এসব। এই সবের ওপরই ফোকাস করে থাকতে পছন্দ করি।'
ভাইরাল ভিডিও নিয়ে মহিলার দাবি, 'যেই ভাইরাল করুক সে স্টুডেন্টদের কথা ভাবছে না। ওদের মানসিক স্বাস্থ্য আছে। কেরিয়ার আছে। আমার আবেদন, হাত জোর করে বলছি, এটাকে নিয়ে আর না এগোতে। বাড়াবাড়ি না করতে। সত্যি হলে আলাদা ব্যাপার। এগুলো ফেক, বেসলেস। তাই মাতামাতি করে লাভ হবে না। এতে আপনাদেরও সময় নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্টুডেন্টসরা। মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে। আমি ওদের জন্য কাজ করেছি বরাবর। ওদের যেন কোনও ক্ষতি না হয়।'
অনুরোধের সুরে তাঁর একটাই দাবি, 'যদি এমন ভিডিও আসে রিপোর্ট করুন। আমাকে পারলে সাপোর্ট করুন। এই জিনিসগুলো বন্ধ হওয়া উচিত। আমার তরফে যা যা পদক্ষেপ করার আমি করব। করছিও। আমি কী পদক্ষেপ করছি, যা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেব। একটু রিপোর্ট করবেন ভিডিওগুলো। যাতে ভাইরাল না হয়।'
এদিকে অধ্যাপিকা আগেই দাবি করেছিলেন, প্রজেক্টের অংশ হিসেবে ওই দৃশ্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কোন প্রজেক্টে এই ধরনের বিবাহের প্রস্তুতি ও ভিডিও ওঠে সেই নিয়ে প্রশ্নের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।