শেষ আপডেট: 8th September 2024 13:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডে রাজ্য সরকার এবং শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাংসদ পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জহর সরকার। ইতিমধ্যে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। পোস্টে দেবাংশু লিখেছেন, 'যুদ্ধের সময় যারা পালায় কিংবা গা বাঁচিয়ে চলে, ইতিহাস তাদের লজ্জার নজরে দেখে।'
শুধু তাই নয়, দেবাংশু একই সঙ্গে লিখেছেন, "একজন ছেড়েছেন, আরেকজনও ছাড়ুন। স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে, যদি উল্টো দিকে সাঁতার কাটতে নাই পারলেন তাহলে মানুষ জন্ম বৃথা!"
একজন ছেড়েছেন, আরেকজনও ছাড়ুন। স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে, যদি উল্টো দিকে সাঁতার কাটতে নাই পারলেন তাহলে মানুষ জন্ম বৃথা!
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) September 8, 2024
যুদ্ধের সময় যারা পালায় কিংবা গা বাঁচিয়ে চলে, ইতিহাস তাদের লজ্জার নজরে দেখে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে আরজি কর ইস্যুতে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে জহর লিখেছেন, ‘‘এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এও লিছেছেন, "আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না।’’
জহর সরকারের এই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করেন দেবাংশু। তবে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে দেবাংশুর লেখা থেকে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, তিনি জহর সরকারকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি 'আরেকজন' বলতে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে বোঝাতে চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই একাধিকবার দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি, কখনও প্রশ্ন তুলেছিলেন তদন্ত নিয়ে, কখনও প্রশ্ন করেছিলেন পুলিশের ভূমিকাকে। বাড়ির সামনে প্রতিবাদেও বসেছিলেন। এমনকি এসবের জেরে পুলিশ তলবও করে তাঁকে।তারপরেও নিজের মতো করে প্রতিবাদ জারি রেখে বলেছেন, "বিবেকের ডাকে রাস্তায় নেমেছি।"
এমনকী সোশ্যাল মাধ্যমে ফরাসি বিপ্লবের কথা, বাস্তিল দুর্গের পতনের কথা উল্লেখ করেছেন। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়, রাজনৈতিক মহলে।
অনেকের মতে, জহর সরকার ইস্তফা দেওয়ার পর নাম না করে সুখেন্দুশেখরের উদ্দেশে সেই প্রশ্নটাই ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু। 'স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে' লিখে সম্ভবত এও বলতে চেয়েছেন, প্রতিবাদ করতে হলে স্রোতের মধ্যে থেকে কেন?
যদিও ইস্তফার ব্যাপারে সুখেন্দুশেখর এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৌশলী সুখেন্দু বলেছেন, "জহর সরকারের ইস্তফার খবর পেয়েছি। কিন্তু আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আমি এর বিরোধিতাও করছি না। সমর্থনও নয়।"