শেষ আপডেট: 9th December 2024 16:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সময় যত গড়াচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও উত্তাল হচ্ছে। ওপার বাংলার হিন্দুদের উপর চলছে লাগাতার অত্যাচার। যা নিয়ে সরব হয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশ। প্রতিবেশী দেশ হওয়ার কারণে ভারতের মাথাব্যাথা সবচেয়ে বেশি। ওপার বাংলার সংখ্যালঘুদের উপর লাগাতার আক্রমণের প্রতিবাদে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে শুধু ভারত সরকার বললে ভুল হবে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। হিন্দুদের উপর অত্যাচার থামাতে ওপার বাংলার মহম্মদ ইউনুস সরকারের শেষ দেখে ছাড়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যার পাল্টা বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য তথা বিএনপি নেতা বাংলা দখলের ডাক দিয়েছিলেন। এবার সেই মন্তব্যের পাল্টা শাসক ও বিরোধী শিবিরে একই সুর শোনা গেল।
সোমবারই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছিলেন, আমরা বসে ললিপপ খাব না। তবে গোটা বিষয়টাই কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে। তবে বাংলা দখলের প্রসঙ্গ নিয়ে গর্জে উঠে মমতা বলেন, ‘বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড দখল করবেন। আপনার সেই ক্ষমতা নেই। আর আমরা বসে ললিপপ খাব এটা ভাববেন না।' মমতা আরও জানান, 'আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।'
মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের রেশ ধরে এদিন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর জানান, ‘বাংলাদেশের সরকার মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। ইন্দিরা গান্ধী যদি সহযোগিতা না করতেন বা তিনি যদি শেখ মুজিবরের পাশে না থাকতেন তাহলে পশ্চিম বাংলা থেকে পূর্ব বাংলা তৈরি হত না।’
কলকাতা চার ঘণ্টার মধ্যে দখল করা প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক মনে করিয়ে দেন, ‘কলকাতা কেন ওরা ৪০ দিনে সীমান্ত টুকুও টপকাতে পারবে না। আগে পেরিয়ে দেখাক তারপর তো কলকাতা দখলের প্রসঙ্গ। এসব পাগলের প্রলাপ। ভারত সরকারের বিদেশ সচিব বাংলাদেশে গেছেন। আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আমি চাই বাংলাদেশের সবাই শান্তিতে বসবাস করুন। সেই দায়িত্ব নিতে হবে বাংলাদেশ প্রশাসনকেই।’
তৃণমূল বিধায়কের সুরে সুর মিলিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘বাংলাদেশের যারা এমন কথা বলছেন তারা মূর্খ ছাড়া কিছুই নয়। সংখ্যালঘুদের উপর এভাবে অত্যাচার একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের পাঁচ মিনিট লাগবে না বাংলাদেশকে স্তব্ধ করতে। মুখে বললেই হবে না কাজে করে দেখাতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ। ওখানকার সব পরিষেবা ভারত দেয়। সেই বাংলাদেশ ভারতকে অপমান করছে।’
একাধিক বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও ওপার বাংলার পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের প্রশাসনের লাগাতার হুমকি উপেক্ষা করেও সংখ্যালঘুদের বাঁচাতে একজোট রাজ্যের শাসক-বিরোধী দুই শিবির। সোমবার একদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল বিধায়ক বাংলাদেশকে শবক শেখানোর কথা বললেন, একই পথে হাঁটলেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালও। পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন কলকাতা দখলের পথ এতটা সহজ নয়। দিল্লি এখনও অনেক দূর।