শেষ আপডেট: 26th September 2023 10:41
রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। শুধু কলকাতাতেই (Kolkata) আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার। জেলাতেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গত তিন-চারদিন ধরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকার (West Bengal Dengue Awarness)। সোমবারই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের এক লক্ষ কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
অভিযোগ, ডেঙ্গি নিয়ে তথ্য গোপন করেছে রাজ্য। সোমবার কলকাতায় (Kolkata) বিরোধীরা মশারি নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি সরগরম।
দুর্গাপুজো এমন এক উৎসব যাতে রাজ্যের সবচেয়ে বেশি মানুষ যুক্ত হন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার করা যেতে পারত। বহু সংখ্যক মানুষের কাছে বুঝিয়ে বলা যেত, এই মারণরোগকে ঠেকানোর উপায় কী। সরকার চায়, ক্লাবগুলি এই সচেতনতার প্রসারে বড় ভূমিকা নিক। সেজন্য তাদের অনুদান দেওয়া হয়। এবছর পুজোর অনুদান আরও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু ক্লাবগুলোর তেমন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে কই? নিতান্ত গতানুগতিক প্রচার করে তারা দায় সারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্যান্ডেলের পাশে ডেঙ্গি নিয়ে একটামাত্র ফেস্টুন টাঙানো আছে। সেদিকে কতজনের চোখ পড়ে সন্দেহ। মনে হয় পুজোর উদ্যোক্তারা ভাবেন, দুর্গাপুজো হল আনন্দ করার সময়, এই সময় রোগের প্রসঙ্গ তুলে মনকে ভারাক্রান্ত করার কী দরকার।
ডেঙ্গি সম্পর্কে (Dengue) তথ্য সংগ্রহ করার জন্য আপাতত কিছু গতানুগতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরসভার কর্মীরা অনেক বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন, কারও জ্বর হয়েছে কিনা। এই কর্মীদের বেতন অত্যন্ত কম। কাজও তেমন দায়সারা। তাছাড়া কোনও রোগকেই শুধু সরকারি উদ্যোগে ঠেকানো যায় না। নাগরিকরা যদি সচেতন না হন, কিছুতেই মশার বাড়বৃদ্ধি রোধ করা যাবে না।
সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ক্লাবগুলো সত্যিই বড় ভূমিকা নিতে পারে। সেজন্য দরকার সদিচ্ছা। কয়েক হাজার ক্লাব যদি এলাকায় এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রচার শুরু করে, কোথাও জল জমছে কিনা নজর রাখে, তা হলে একটা ফল পাওয়া যাবেই।
প্রতিবছর এই সময়টায় অনেকে ডেঙ্গিতে (Dengue) আক্রান্ত হন। কারও কারও জীবনও চলে যায়। তখন শুরু হয় হইচই। ডেঙ্গি না ছড়ায় সেজন্য উদ্যোগও নেওয়া হয়। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয় না। কারণ যেই ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে শুরু করে, সঙ্গে সঙ্গে সবাই উদাসীন হয়ে পড়ে।
আসলে রোগের আঁচ গায়ে না লাগলে আমরা সতর্ক হই না। এই মানসিকতা বদলানোর জন্যই গণ উদ্যোগ নেওয়া দরকার। শুধু পুজোর সময় নয়, ডেঙ্গির (Dengue) মরসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্লাবগুলো তৎপর হোক। বার বার মানুষকে সতর্ক করে দিক।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গিতে আক্রান্ত আট থেকে আশি, শিশুদের সংক্রমণ থেকে বাঁচাবেন কীভাবে