শেষ আপডেট: 2 May 2025 18:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পশ্চিম বর্ধমান: অঙ্কে ৯৮, ফিজিক্যাল সায়েন্সে ৯৭, লাইফ সায়েন্সে ৯৮, ইতিহাসে ৯৫, ভূগোলে ৯৫। সোনা ঝড়ানো মার্কশিট। কিন্তু দেখে যাওয়া হল না থৈবির। শুধু পরিবার নয় মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর পর থেকে চোখের জল বাঁধ মানছে না আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীদেরও।
আসানসোল উমারানি গড়াই স্কুলের সব সময়ের টপার ছিল থৈবি মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হতেই দেখা গেল ৯৬.২৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে মৃত্যুর পরেও স্কুলে টপারই রইল থৈবি। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৪। মার্কশিট হাতে নিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না শিক্ষিকারাও।
গত ১৬ এপ্রিল জন্ডিসে মৃত্যু হয় থৈবির। পরীক্ষার আগে রোগ ধরা পড়ে। অসহ্য পেটে যন্ত্রণা নিয়েই পরীক্ষা দিয়েছিল। শুধমাত্র সুস্থ ছিল বাংলা পরীক্ষার দিন। আর বাংলাতেই তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯। তারপর থেকেই শরীরটা যে বেশি খারাপ হয়। স্কুলের শিক্ষিকারা জানান, থৈবির এতটাই মেধা ছিল যে সুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিতে পারলে হয়তো রাজ্যে টপ করতে পারত।
থৈবির বাবা বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় পেশায় হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। মা পিউ মুখোপাধ্যায় গৃহবধূ। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই তার জন্ডিস ধরা পড়ে। চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে হায়দ্রাবাদ,ভেলোর সর্বত্র ছুটে যান বাবা-মা। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার জন্য ১ কোটি টাকা খরচ। জানতে পেরে এগিয়ে এসেছিলেন আসানসোল শহরের মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন শহরবাসী। ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ যোগানো হয়। তবু বাঁচানো যায়নি থৈবিকে।
মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর ধাক্কা সইতে পারবেন না ভেবেই কয়েকদিনের জন্য ঘর ছেড়েছেন থৈবির বাবা-মা। বাড়িতে রয়েছেন থৈবির বৃদ্ধ দাদু ও ঠাকুমা। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল থৈবির ছবি আঁকড়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। আনন্দ বিদায় নিয়েছে থৈবির বাড়ি থেকে। শুধু শ্বাস নিয়ে বেঁচে আছে একটা পরিবার।