প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 2 May 2025 16:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা পেরোল অনেকেই। মাধ্যমিক আসছে মানে মোটামুটি তার বছর দুই আগে থেকেই বাড়িতে শুরু যায় প্রস্তুতি। কী করলে ছেলে বা মেয়ের পড়াশোনা করতে সুবিধা হবে, কী কী পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যায়, কী করলে বাড়িতে শান্তি বজায় থাকবে এই নিয়ে মা-বাবা সবসময় তটস্থ। বাড়িতে কারও আসা যাওয়া বন্ধ, আত্মীয়দের কাছে ঘুরতে যাওয়া না হয় পরেই হবে।
এমন অনেক সাবধানতার পরও যখন মনের মতো রেজাল্ট না হয়, তখন খারাপ লাগাটাই খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে বাবা-মা এতে যতটা না কষ্ট পাচ্ছেন, এই রেজাল্ট তাঁদের থেকেও অনেক বেশি বেঁধে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে।
এমন অবস্থায় অনেকসময়ই ছেলেমেয়েরা জীবনের প্রতি আশা হারিয়ে ফেলে। আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে চরম সমস্যার মুখোমুখি হয়। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে সবটা গুছিয়ে নিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে, তা জানতে ‘দ্য ওয়াল’-এর তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল মনোবিদ সাহানা নাগের সঙ্গে।
তাঁর কথায়, ‘মাধ্যমিক জীবনের একটা প্রথম ধাপ এটা ঠিক। কিন্তু আজ এই রেজাল্টের যে ভীষণ গুরুত্ব আছে বলে পরীক্ষার্থীদের মনে হচ্ছে, আজ থেকে চার বছর বাদে কিন্তু সেটা আর কিছুই মনে হবে না। আমরা কতটা কী শিখেছি, সেটারই একটা উদযাপনের নাম এই রেজাল্ট। যদি পরীক্ষায় ফল খারাপ হয়েও থাকে, তাহলে ধরে নিতেই পারি যে এইবারে শেখাটা একটু কম হয়েছে। পরের কোনও পরীক্ষায় সেটা ভাল হতেই পারে। আমরা এভাবেও ভেবে দেখতে পারি, তাই না?’
তিনি আরও বলেন, ‘রেজাল্টের পর বাচ্চাদের মধ্যে অনেক রকম অনুভূতিই কাজ করতে পারে। ভাল রেজাল্ট হলে উচ্ছ্বাস যেমন হবে, খারাপ হলে মনখারাপ হবে। যেটাই হোক সেটাকে সেইভাবেই সামলানো উচিত।’
মা-বাবাকে কী পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি?
তাঁর কথায়, ‘সন্তান যদি একটা পরীক্ষায় ভাল ফল করতে না পারে, তার মানে এটা হতেও পারে যে সে অন্য অনেক কিছুতেই ভাল করতে পারে। সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত। বাচ্চার অনুভূতিকে আগে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।’ এভাবে ভাবতে পারলে, সন্তান এবং মা-বাবা উভয়ের জন্যই, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ হবে বলে মনে করছেন তিনি।
পড়াশোনার বাইরে সন্তান যা করতে ভালবাসে, সেটায় তাঁকে উৎসাহ দিন। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করবেন না। পরিস্থিতি একটু সামলালে বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন বা ডিনার সারতে পারেন পছন্দের রেস্তরাঁয়।
মনোবিদরা মনে করেন, হোক না মাধ্যমিক, তবু একটা পরীক্ষা আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ কোনও বৃহত্তর অর্থে পাল্টে দিতে পারবে না। কিন্তু আপনি কীভাবে রেজাল্ট বেরনোর পরের মুহূর্তে সন্তানের পাশে থাকছেন, সেটা তার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।