শেষ আপডেট: 11th January 2025 18:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন একের পর এক প্রসূতি। শুক্রবার সকালে তাঁদেরই মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আরও দুই প্রসূতির অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। এই অভিযোগের পরই তৎপরতা দেখিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। ইতিমধ্যে রিঙ্গার ল্যাকটেট-সহ ১০টি তরল ওষুধ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল হাসপাতাল চত্বর। মৃত প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, সন্তানের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। স্যালাইনের সমস্যাতেই এমন বিপত্তি হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শনিবার সকালে স্টেট ওয়েলফেয়ার অফিসার অসীম দাস মালাকারের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম পৌঁছয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তদন্তকারী দলে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের দুজন কর্তা, দুজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ-সহ ৬ জন চিকিৎসক এবং, চারজন ড্রাগ ইন্সপেক্টর।
রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য ওষুধ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিতে আর দেরি করা হয়নি। রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে এই ওষুধগুলি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কী কী ওষুধের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার?
এই তালিকায় রয়েছে, রিঙ্গার ল্যাকটেট (৫০০ মিলি), রিঙ্গার সলিউশন আইপি ইঞ্জেকশন (৫০০ মিলি), প্যারাসিটামল ইনফিউশন (১০০০ এমজি/১০০ মিলি), অফ্লাক্সোসিন (২০০মিলিগ্রাম/১০০ মিলি), লেভোফ্লোক্সাসিন (১০০ মিলি), ১/২ ডিএনএস (৫০০ মিলি)।
এছাড়া ডেস্কট্রোস ইঞ্জেকশন, এমওএসএম/লিটার (৫০০ মিলি), মানিনটোল ইনফিউশন আইপি (২০%, ১০০ মিলি), সোডিয়াম ক্লোরাইড ইরিগেশন সলিউশন (৩ লিটার), পেডিয়াট্রিক মেন্টেনেন্স ইলেকট্রোলাইট সলিউশন (৫০০ মিলি)।
ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, যে ওষুধ কোম্পানির স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই কোম্পানিকে গত ১০ ডিসেম্বর নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। প্রায় এক মাস পরেও সেই কোম্পানির স্যালাইন কীভাবে সরকারি হাসপাতালে রয়ে গেল, তাও খতিয়ে দেখেন স্বাস্থ্য দফতরের ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম।
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমও জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে পদক্ষেপ করা হবে। ইতিমধ্যে ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের তরফে। সেই রিপোর্ট যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও।