শেষ আপডেট: 1st October 2023 20:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংঘাতের আবহেই ফের রাজ্যের ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের এডুকেশন ফোরামের তরফে প্রেস বিবৃতি দিয়ে বলা হল, আচার্য তথা রাজ্যপাল নিজেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করছেন। বাংলার শিক্ষা জগতকে অপমান করছেন তিনি।
এই বিবৃতিতে এডুকেশন ফোরামের তরফে সই করেছেন অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র। এদিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করছেন আচার্য। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য বিধানসভায় পাস হওয়া বিল মানছেন না তিনি। 'আজ ফের একবার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের পছন্দের উপাচার্য নিয়োগ করেছেন তিনি, যেখানে এই পুরো বিষয়টাকেই চ্যালেঞ্জ করে এসএলপি ফাইল করেছে রাজ্য সরকার, এবং তা শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। এই ঘটনা সরাসরি আইনি পদ্ধতিকে অমান্য করা এবং সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার সামিল,' এডুকেশন ফোরামের তরফে দাবি করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
দ্য ওয়াল এখন হোয়াটসঅ্যাপেও। ফলো করতে ক্লিক করুন।
উল্লেখ্য, এর আগে এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সার্চ এবং সিলেকশন কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছিল। সেই কমিটির সদস্য হিসেবে রাজ্য এবং রাজ্যপাল উভয় তরফ থেকেই তিন থেকে পাঁচ জনের নাম চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেই রাজ্যপাল ফের উপাচার্য নিয়োগ করায় আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অবমাননা এবং বাংলা শিক্ষা জগতকে অপমান করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে এডুকেশন ফোরাম। তারা জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য হিসেবে শিক্ষা জগত থেকে যাঁদের মনোনীত করেছেন রাজ্যপাল, তাঁদের নাম দেখে তারা স্তম্ভিত। তাঁরা হয় বাংলার বাইরের মানুষ, অথবা পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা জগতের পরিধি থেকে অনেক দূরে। এমনকী, রাজ্যপালের মনোনীত এই সমস্ত শিক্ষাবিদদের পেশাগত রেকর্ডের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমগুলিতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলির কারণে জনমানসে তাঁদের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে ফোরামের তরফে।
জানা গেছে, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য করা হয়েছে অচিন্ত্য সাহাকে। মালদহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হয়েছেন বিবি পারিদা। এছাড়াও কোচবিহার পঞ্চানন বিশ্ববিদ্যালয়, আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্যরা হলেন যথাক্রমে রথিন বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলীপ মাইতি, সিএম রবিন্দ্রন।
উপাচার্য নিয়োগ সহ একাধিক বিষয় নিয়ে রাজভবন-নবান্ন ঝামেলা লেগেই রয়েছে। রাজভবনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। রাজ্যের অভিযোগ, রাজ্যপাল বিজেপির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে বিজেপির আদেশ পালন করছেন। যদিও রাজভবনের নিরপেক্ষতা প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যপাল বলেন, "রাজভবন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। এটি একটি অরাজনৈতিক পরিসর হওয়া উচিৎ।"
রাজ্যের শিক্ষাদফতরের অভিযোগ, রাজ্যপাল কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে নিজের পছন্দ মতো লোক বসাচ্ছেন। যদিও সেইসব অভিযোগে আমল দিতে নারাজ রাজ্যপাল।