শেষ আপডেট: 16 April 2025 13:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুর্শিদাবাদে দাঙ্গা পরিস্থিতির জন্য সরাসরি বিজেপি তথা কেন্দ্রের সরকারকে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি যে ধর্মীয় অসন্তোষ ও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে তা পরিকল্পিত ঘটনা। ‘প্ল্যান করে’ এই অশান্তি পাকানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকতে দিয়েছে বিএসএফ। বাইরে থেকে লোক এনেছে বিজেপি। তারাই অশান্তির আগুন জ্বেলেছে।
বুধবার নেতাজি ইনডোরে ইমাম-মোয়াজ্জেম-বুদ্ধিজীবিদের সভায় আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যেখানে গণ্ডগোল ঘটেছে তা মুর্শিদাবাদ লোকসভার মধ্যে পড়ে না। মালদহ লোকসভার মধ্যে পড়ে। ওখানে কংগ্রেস জিতেছে। ভোটের সময়ে জিতবে আর গন্ডগোল লাগলে সামলাতে পারবে না, এতো আশা করা যায় না।
এর পরই সরাসরি বিজেপি ও কেন্দ্রের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না। আপনাদের প্ল্যানিংটা কী? আপনি ইউনুসের সঙ্গে গোপন বৈঠক করুন। তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকবে কেন?” মমতার কথায়, “সীমান্ত দেখে বিএসএফ। রাজ্য সরকারের কাছে সীমান্ত সামলানোর অধিকার নেই। কে ঢুকছে কে বেরোচ্ছে রাজ্য সরকার জানতে পারে না”।
এখানেই থেমে না থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি কেন বাইরের লোক এনে এখানে গন্ডগোল পাকাবে? কেন এজেন্সির মাধ্যমে দাঙ্গা করাবে? আমি জেনেছি বাচ্চা ছেলেদের পাঁচ ছ’হাজার টাকা করে হাতে দিয়ে ইট ছোড়াচ্ছে”।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কথা রাজ্য বিজেপি ও তাঁদের কেন্দ্রীয় নেতারা যে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা প্রায় অবধারিত। তবে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গ থেকে এখনও কিছু বলা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনি বাংলার ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাতে চান, হিন্দু মুসলমানের মধ্যে ভাগাভাগি করতে চান। আপনার জুমলা সরকার খালি বলে আমরা শুধু হিন্দুদের জন্য। এই কারণেই দেশে অশান্তি। এভাবে চললে তো দেশটা ভাগ হয়ে যাবে। জোড়ার চেষ্টা করুন। ভাঙবেন না”।
এদিন ইমাম মোয়াজ্জেমদের সভায় সংখ্যালঘুদের একাংশের উদ্দেশেও কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওয়াকফ আইন তো রাজ্যের সরকার সংশোধন করেনি। দিল্লি করেছে। আমরা তো প্রতিবাদ করেছি। সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ করেছি। সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছি। আপনাদের এত তাড়া কীসের। ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার কি একসঙ্গে করা যায়!
তাঁর কথায়, “আপনারা দিল্লিতে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রীবর সঙ্গে দেখা করুন। তৃণমূলের সাংসদরাও আপনাদের সঙ্গে যাবেন”।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এদিন মূল নিশানা ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কালীদাসের মতো হয়ে গেছে। যে ডালে বসে আছে, সেই ডাল কাটছে। আপনার এত তাড়া কীসের!” অমিত শাহকে আরও কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “ আপনি তো প্রাইম মিনিস্টার কখনও হবে না। মোদী জি চলে গেলে কী হবে? আপনাকে তো হামাগুড়ি দিতে হবে। মোদীজিকে বলব ওনাকে একটু কন্ট্রোল করতে। সমস্ত এজেন্সিকে দিয়ে দিয়েছেন ওনার হাতে। মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে তা পুরোটাই পরিকল্পিত”।