শেষ আপডেট: 6th March 2025 20:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এ যেন রাম না জন্মাতেই রামায়ণের গল্প!
তখনও প্রাথমিকের চাকরির নিয়োগ হয়নি। তারই আগে কত শূন্যপদে নিয়োগ করা যেতে পারে, সেখান থেকে কত টাকা তোলা যেতে পারে, চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে মাথা পিছু কত টাকা নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে নিজের বেহালার বাড়িতে দুই তৃণমূল নেতার (বর্তমানে বহিষ্কৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষ) সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু বৈঠকে বসেছিলেন বলে অভিযোগ।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের সূত্র ধরে সুজয়কৃষ্ণ, কুন্তল, শান্তনুদের গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। শান্তনু বাদে বাকি দু'জন জামিনে মুক্ত। ওই তদন্তের সূত্র ধরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে এসে পৌঁছেছে ৭২.৫৯ মিনিটের একটি অডিও ক্লিপিংস। তাতেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর পাশাপাশি শান্তনু ও কুন্তলের কণ্ঠ শোনা গিয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ইতিমধ্যে তিনজনের কণ্ঠস্বরের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য দিল্লিতে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সূত্রের দাবি, সম্প্রতি এই অডিও ক্লিপিংসের কথোপকথনের বয়ান আদালতে তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানেই দাবি করা হয়েছে, নিয়োগের আগেই চাকরি বিক্রির ছক কষা হয়েছিল। এমনকী চাকরি বিক্রি করে ১০০ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়। এমনকী কয়েক'শ চাকরি প্রার্থী টাকা দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছে বলে কাকু-সহ তিন তৃণমূল নেতার কথোপকথনে বারে বারে উঠে এসেছে বলেও দাবি।
সূত্রের দাবি, টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রির এই আলোচনায় তিন বক্তার মুখে একাধিকবার উঠে এসেছে মানিক ভট্টাচার্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও। বস্তুত, মানিক জামিনে মুক্ত। আর ২০২২ সালের ২২ জুলাই গ্রেফতারের পর থেকে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বিতর্কিত ওই অডিও ক্লিপিংসের সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, শান্তনু ও কুন্তলের কণ্ঠস্বরের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষায় মিলে গেলে আগামীদিনে এরা তো বটেই সেই সঙ্গে চাপ বাড়তে পারে আরও একাধিক অভিযুক্তের।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ মামলায় সম্প্রতি আদালতে তৃতীয় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। সেখানে জনৈক অভিষেকের নাম উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা নিয়ে সম্প্রতি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ফোঁস করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। 'সিবিআই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর মক্কেলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার মরিয়া চেষ্টা করছে' বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন তিনি। এমনকী নেতাজি ইনডোরের সভা থেকে এ বিষয়ে সিবিআইকে কটাক্ষ করে অভিষেকও বলেছিলেন, ‘‘কে এই অভিষেক? সিবিআই ভাববাচ্যে কথা বলছে কেন?’’
মামলার গতিপথ আগামী দিনে কোন দিকে এগোয় তা নিয়ে কৌতূহল সব মহলে।