শেষ আপডেট: 30th November 2023 14:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: এক ব্যাগ ভর্তি এটিএম কার্ড নিয়ে গ্রামে এসেছিল ডেলিভারি বয়। খুঁজে বের করেছিল গ্রাহকদের। বাড়ির ঠিকানা ঠিকই আছে, কিন্তু ফোন নম্বরে কোনও মিল নেই। যাঁদের নামে কার্ড এসেছে, তাঁদের কেউ কস্মিনকালেও ব্যাঙ্কে কোনও অ্যাকাউন্ট খোলেননি বলে দাবি। অথচ এটিএম কার্ড এসে গেছে বাড়ি বয়ে।
ব্যাগ ভর্তি এটিএম কার্ড খুলতেই গ্রামের বাসিন্দারা তো হা হয়ে যান। দেখা যায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের বর্ধমান শহরের কার্জনগেটের পাশে সিটি টাওয়ারে অবস্থিত শাখা থেকে কার্ডগুলি পাঠানো হয়েছে। এমন কার্ড পেয়েই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে খণ্ডঘোষের কালনা গ্রামের বাসিন্দাদের। কারণ অ্যাকাউন্ট খুলতে কখনও ব্যাঙ্কেই যাননি তাঁরা।
গ্রামবাসী সেখ মতিউর রহমান জানান, তাঁরা জোটবদ্ধ হয়ে ব্যাঙ্কে গেলে প্রথমে কর্তৃপক্ষ কিছু শুনতেই চাননি। পরে আরও বেশি লোকজন নিয়ে ব্যাঙ্কে গেলে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার দাবি করেন, তাঁদের নামে এখানে অ্যাকাউন্ট আছে। তাই এটিএম কার্ড গেছে বাড়িতে। তাঁরা আরও জানতে পারেন, কয়েকজনের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোটা টাকার লেনদেনও হয়েছে। অথচ গ্রামের মানুষ পুরো অন্ধকারে। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে দেখানো হয়, পাশবুকেও তাঁদের ছবি। সেও এক অদ্ভুত। সেখ মতিউর রহমান বলেন, “কেউ মাঠে একশোদিনের কাজ করছে, কেউ বাড়িতে রান্না করছে, আবার কেউ গোয়ালে কাজ করছে। এমন সমস্ত ছবি দিয়েই ব্যঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।”
গ্রামের বাসিন্দারা এরপর প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। তবে এখনও পর্যন্ত বিষয়টির কোনও সুরাহা হয়নি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে অভিযোগের তদন্ত চলছে। বিরোধীরের দাবি, এই গোটা ঘটনায় শাসকদলের নেতারা জড়িত। তাঁরাই এই সব কারসাজি করেছেন। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “দক্ষিণ দামোদর এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়। একশ্রেণির অসাধু রাইসমিল মালিক স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগসাজশ করে গ্রামের সাধারণ মানুষের নামে অবৈধ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছে। সঠিক তদন্ত হলে আসল রহস্যের সমাধান হবে।” যদিও খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম দাবি করেন, এই ধরনের কোনও ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই। যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে তদন্তেই তা প্রকাশ্যে আসবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার জানান, অভিযোগ জমা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।