শেষ আপডেট: 22nd October 2021 10:02
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশের প্রথম ৫০ শতাংশ মানুষকে টিকা (Vaccine) দেওয়া যতটা সহজ, পরের পদক্ষেপটা ততটাই কঠিন। এমনটাই মানছেন দেশের গবেষক ও ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা। মাত্র ৯ মাসে ১০০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য পূরণ করে প্রাথমিক টার্গেট পূরণ করেছে ভারত, কিন্তু সবচেয়ে কঠিন পথচলাটা এখনও বাকি। চিনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে টিকাকরণ কর্মসূচীতে ইতিহাস গড়েছে ভারত। তবে ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞদের মত, উৎসব পালনের এখনই সময় আসেনি, দেশের সমস্ত নাগরিককে টিকা দিয়ে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করাটাই আসল উদ্দেশ্য। দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) জানাচ্ছে, টিকাকরণের প্রথম ধাপটা সাফল্যের সঙ্গেই পার করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পরের পথটা আরও লম্বা। ৪৫ বছর ও তার ঊর্ধ্বে হাই-রিস্ক গ্রুপের প্রবীণদের টিকার একটি করে ডোজ দেওয়া শেষ হয়েছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়। সমীক্ষা বলছে, ২০ অক্টোবরের মধ্যেই ৪৫-৫৯ বছর বয়সী ৮ কোটিকে টিকার ফার্স্ট ডোজ ৬০ বছর ও তার ঊর্ধ্বে ৬ কোটির বেশিকে টিকার দুটি করে ডোজ দেওয়া শেষ হয়েছে। ১৮ ঊর্ধ্ব থেকে ৪৫ বছর অবধি টিকাকরণ শেষ করাটাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। তাছাড়া টিকার একটি করে ডোজ পেয়েছেন যাঁরা তাঁদের সেকেন্ড ডোজও দিতে হবে। কাজেই গোটা প্রক্রিয়াটা আরও সুপরিকল্পিতভাবে করতে হবে কেন্দ্রকে। এই মুহূর্তে কেন্দ্রের টিকাকরণ সংক্রান্ত যা পরিকাঠামো তাতে আগামী তিন মাসে ৮০- ৯০ কোটি টিকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে। জানুয়ারির শেষ অবধি আরও ১০০ কোটি টিকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলছেন, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যখন টিকাকরণ শুরু হয় তখন পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের জোগান ছিল না। এর মধ্যেও ১০০ কোটির টার্গেট পূরণ করাটা সহজ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু এখন টিকার জোগান আরও বাড়বে। দেশি ভ্যাকসিনের সঙ্গে বিদেশি ভ্যাকসিনের ডোজও দেওয়া শুরু হবে। তাছাড়া বাচ্চাদের টিকাকরণ শুরু করাটাও অন্যতম বড় লক্ষ্য। সেক্ষেত্রেও ভারত বায়োটেক ও জাইদাস ক্যাডিলার টিকার পর্যাপ্ত জোগান থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক আগেই বলেছিল, অগস্ট থেকে ডিসেম্বর অবধি কোভিড ভ্যাকসিনের ২১৬ কোটি ডোজ তৈরির প্রস্তুতি চলছে। হিসেব করে দেখা গেছে, টিকার উৎপাদন পরিকল্পনামাফিক হলে ডিসেম্বর অবধি ২৯৩.৮ কোটি ডোজ চলে আসবে দেশের বাজারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ টিকার দুটি করে ডোজ নিয়ে ফেললে বাকিদের মধ্যে টিকা নেওয়ার অনীহা জন্মাতে পারে। অনেকেই ভাববেন, হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গেছে, আশপাশের মানুষজন টিকা নিয়ে নিয়েছেন মানে করোনা আর ছড়াবার ভয় নেই। তাই দেশের বাকি জনসংখ্যাকে টিকা দিতে উৎসাহিত করাটাও কেন্দ্রের লক্ষ্য হবে। আর সেই কাজটাই অনেক বেশি কঠিন। পড়ুন দ্য ওয়ালের সাহিত্য পত্রিকা 'সুখপাঠ'