শেষ আপডেট: 22nd September 2023 18:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে (Bangladesh) বিতর্কিত ভিসা নীতি (visa policy) ভোটের আগেই কার্যকর করল মার্কিন প্রশাসন। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এবং ঢাকায় সে দেশের দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য, সরকারি কর্তা, শাসক ও বিরোধী দলের নেতা এবং বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু ব্যক্তির উপর ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। অর্থাৎ ওই সব ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আমেরিকা যাওয়ার অনুমতি পাবেন না।
ঘটনাচক্রে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকও হয়েছে। এরই মধ্যে ভিসা নীতি (visa policy) কার্যকরের কথা ঘোষণা করেছে মার্কিন প্রশাসন। এ মাসের গোড়ায় দিল্লিতে জি-২০ সম্নেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাই়েনের সঙ্গে শেখ হাসিনার দীর্ঘ সময় কথা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হাসিনা ও তাঁর মেয়ের সঙ্গে ছবি তোলেন। সেই সৌজন্য ছাপিয়ে আমেরিকা তাদের অবস্থানে অনড় থাকার কথাই স্পষ্ট করল শুক্রবার ভিসা নীতি ভোটের আগেই কার্যকর করে দিয়ে।
মার্কিন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম এবং সংখ্যা প্রকাশ করেনি। তবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ চড়তে শুরু করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এবং ঢাকার দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মার্কিন প্রশাসন মনে করছে ওই ব্যক্তিরা অবাধ ভোটে বাধা হয়ে উঠতে পারেন। দু’দিন আগেই ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস একটি অনুষ্ঠানে বলেন, আমেরিকা কোনও দেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে না। শুক্রবারের ঘোষণা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রশাসনিক মহল মনে করছে, নিষেধাজ্ঞার আওয়াত আসা ব্যক্তিদের ভোটের কাজ থেকে দূরে রাখার জন্য পরোক্ষে চাপ সৃষ্টির জন্যই নির্বাচনের আগে ভিসা নীতি প্রয়োগ করল মার্কিন প্রশাসন।
মাস তিনেক আগে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় মার্কিন প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছিল, অবাধ ভোটে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের ভিসা দেওয়া হবে না। শুক্রবারের ঘোষণায় দেখা গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগেই পদক্ষেপ করা শুরু করল বাইডেন প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট অতীতের নির্বাচনগুলিতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল এমন ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেওয়া হল।
আরও পড়ুন: অল্প চোট থেকে মৃত্যু, এক দশক পর সবেতেই ১০ গুণ ক্ষতিপূরণ বাড়াল রেল
তবে ভিসা নীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশে বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে বিএনপি যেভাবে উল্লাস করেছিল মার্কিন ঘোষণা তাতে রাশ টেনে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বিরোধী দলের নেতারাও আছেন, মার্কিন প্রশাসন যাঁদের অবাধ ভোটে বাধাদানকারী বলে মনে করছে।
প্রশ্ন হল, ভিসা নিষেধাজ্ঞা সংশ্লিষ্টদের জন্য কতটা বিপদের কারণ হতে পারে। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, বাংলাদেশের আমলা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ীদের অনেকেরই আমেরিকায় সম্পত্তি, ব্যবসা আছে। তাছাড়া পড়াশুনো এবং চাকরি সূত্রেও প্রতি বছর হাজার হাজার নাগরিক আমেরিকা পাড়ি দেন। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আমেরিকা যাওয়ার অনুমতি পাবেন না।