শেষ আপডেট: 25th September 2023 06:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার দু’জন গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং উর্জিত প্যাটেল (Urjit patel) মাঝপথে সরে যেতে বাধ্য হন। দু’জনের সঙ্গেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল বলে তখন জানা গিয়েছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক ঠিক কতটা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল তা নিয়ে খুব স্পষ্ট ধারণা মেলেনি তখন আরবিআই এবং সরকার দু’পক্ষই মুখ বন্ধ রাখায়। প্রায় পাঁচ বছর পর সংঘাতের কিছুটা আভাস পাওয়া গেল এক অবসরপ্রাপ্ত আমলার বইয়ের সূত্রে।
বলাই বাহুল্য এই অর্থ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার টাকা। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আরবিআইয়ের কাছে সরকার নগদ অর্থ দাবি করেছিল, এমন তথ্যই আবার সদ্য সামনে এনেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত এক ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য। প্রাক্তন এই অর্থকর্তার দাবি, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারত সরকার আরবিআইয়ের কাছে দুই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা চেয়েছিল। নির্বাচনের আগে নানা প্রকল্পে ওই টাকা খরচ করা হত। কিন্তু আরবিআইয়ের তৎকালীন গভর্নর তা দিতে রাজি হননি। শীর্ষ ব্যাঙ্কের অন্য কর্তারাও এই ব্যাপারে গভর্নরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আচার্যের কথা অনুযায়ী, পরিস্থিতির চাপে প্রথমে উর্জিত, পরে তিনিও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে সরে যেতে বাধ্য হন।
এদিকে, অবসরপ্রাপ্ত অর্থ সচিব গর্গ তাঁর বইয়ে লিখেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৎকালীন প্রধান উর্জিতের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের (Narendra Modi) ‘হতাশাব্যাঞ্জক সম্পর্ক' তৈরি হয়েছিল। ২০১৮-এর ফেব্রুয়ারী নাগাদ তা তলানিতে পোঁছয়। উর্জিত সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তিক্ততা আরও বেড়ে যায়। বিরোধের মূলে ছিল সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির উপর দখলদারি নিয়ে। আরবিআই-কে পাশ কাটিয়ে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষমতা খর্ব করতে চাইছে বলে অভিযোগ তোলেন উর্জিত।
প্রাক্তন অর্থসচিব গর্গ বইয়ে সরকারের পক্ষ নিয়ে উর্জিতের সমালোচনা করেছেন। গর্গের বক্তব্য, আরবিআইয়েরও কিছু নীতিমালা অনুসরণ করা দরকার ছিল। নিয়ামক ব্যাঙ্কের নানা সিদ্ধান্তে মূল্যস্ফীতি ঘটছিল। এছাড়া ব্যাঙ্কগুলির ব্যবসা মার খাচ্ছিল। স্বভাবতই সরকারকে হস্তক্ষেপ করতেই হয়। সরকারকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্কগুলির রেপো রেট বাড়াচ্ছিল, কমাচ্ছিল। এর ধাক্কা গিয়ে পড়ে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থার উপর।
যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্যর বক্তব্য অনুযায়ী সরকারই শীর্ষ ব্যাঙ্কের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছিল এবং নির্বাচনের আগে তারা আরবিআইয়ের তহবিল সরকারের হাতে অর্পণে আপত্তি তোলায় বিরোধ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ধরা পড়ল ৫ লস্কর জঙ্গি, উদ্ধার বহু আগ্নেয়াস্ত্র, ফাঁস বড়সড় নাশকতার ছক