শেষ আপডেট: 12th January 2022 05:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অপ্রিয় প্রশ্নের মুখে সাক্ষাৎকারের মাঝপথে উঠে যাওয়ার নজির অনেক আছে। হালে নরেন্দ্র মোদী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রথম সারির নেতা-নেত্রী যেমন আছেন, তেমনই আছেন স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীরাও। আছে সাংবাদিকের উপর চড়াও হওয়া, নয়া পয়সা সাংবাদিক বলে কটাক্ষের নজির। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরুর মুখে এবার এক গুচ্ছ অপ্রিয় প্রশ্নের সামনে পড়ে সাক্ষাৎকারের মাঝপথে উঠে গিয়ে জোর বিতর্কে জড়িয়েছেন যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রিসভার এক উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য্য। উল্লেখ করার বিষয় হল, যে প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে যোগীর মন্ত্রীর মাথা গরম হয়ে যায় তা এক দাগী অপরাধীকে ঘিরে, যাকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বরাবরই নির্বাচনের বড় ইস্যু। উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকার তাতে নয়া মাত্রা যুক্ত করেছে। ওই রাজ্যের পুলিশ গত পাঁচ বছরে প্রায় দেড়শো দুষ্কৃতীকে হত্যা করেছে। পুলিশ সংঘর্ষে মৃত্যু বলে চালালেও মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, এগুলি পরিকল্পিত বিচার বহির্ভূত হত্যা। রাজ্য সরকার এই সব দাগী অপরাধীদের ছবি-সহ বিজ্ঞাপন প্রচার করে দুষ্কৃতী দমনে সাফল্য দাবি করছে। কিন্তু আশ্চর্যের হল, সবচেয়ে দাগী অপরাধীর ছবি তাতে নেই। তার নাম বিকাশ দুবে। আটজন পুলিশ কর্মীকে খুনের অভিযোগে মধ্যপ্রদেশে আত্মগোপন করে থাকা এই দুষ্কৃতীকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ধরে আনার দু’দিনের মাথায় তাদের দেহ সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে। পুলিশের দাবি, পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষে নিহত হয় ছয় দুষ্কৃতী। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও সরকার ওই ঘটনাকে বিরাট সাফল্য হিসাবে তুলে ধরে তখন। কিন্তু সেই বিকাশ দুবের ছবি এখন নেই সরকারি বিজ্ঞাপনে। অন্য অপরাধীদের ছবি দিয়ে সরকার দুষ্কৃতী দমনের সাফল্য দাবি করছে। একটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক এই সাদামাটা প্রশ্নটাই করেছিলেন যোগীর উপ-মুখ্যমন্ত্রীকে—কেন নেই বিকাশ দুবের ছবি? প্রশ্ন শুনেই চটেন মন্ত্রী। কারণ, বিকাশ দুবের ছবি না ছাপার আসল কারণটি তাঁর পক্ষে বলা কঠিন। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিকাশ দুবে জাতিতে ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণরা যোগী আদিত্যনাথের জমানায় মোটেই স্বস্তিতে নেই। ব্রাহ্মণদের সিংহভাগই এবার সমাজবাদী পার্টির দিকে ঝুঁকে আছে যোগীকে জবাব দেবেন বলে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে কংগ্রেসের ব্রাহ্মণ নেতা জিতিন প্রসাদকে বিজেপিতে এনে যোগী সরাসরি ক্যাবিনেট মন্ত্রী করে দিয়েছেন। তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। সাংবাদিকের দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, উত্তরাখণ্ডে ধর্ম সংসদ থেকে যেভাবে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা হল, হিংসা ছড়ানো হল, বিজেপি এবং মন্ত্রীরা কেন প্রতিবাদ করলেন না? জবাবে কেশব প্রসাদ বলেন, ওঁরা যা ভালো মনে করেছেন বলেছেন। যা বলার অধিকার ওদের আছে। সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তা হলে এটা কি গণহত্যায় উস্কানি দেওয়া নয়? এতেই চটেন যোগীর উপ-মুখ্যমন্ত্রী। সাক্ষাৎকারের মাঝপথে উঠে যান তিনি।