শেষ আপডেট: 6th November 2024 20:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ডেডবডির 'দখল' নিয়ে অতীতে রাজনৈতিক লড়াই দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু একটি দেহ নিয়ে দুই পরিবারের বচসা থেকে হাতাহাতি, এমনকী শববাহী গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনায় শোরগোল তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়িতে।
দু'পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ পাল্টা অভিযোগও দায়ের করেছেন। পরে পুলিশি মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে গোটা ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাঁদের বক্তব্য, সমাজসেবা করতে এসে এভাবে মারধরের মুখে পড়তে হলে আগামীদিনে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কালী পুজোর প্রতিমা দর্শনে বেরিয়ে পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন কলেজ ছাত্রী সঞ্চারী সরকার। জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন দেব নগর এলাকার বাসিন্দা সঞ্চারী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিলিগুড়ির একটি নার্সিং হোমে ভর্তি ছিলেন। সোমবার তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সন্ধেয় সঞ্চারীর মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছলে ছাত্রীর বাবার বাড়ি এবং মামার বাড়ির পরিবারের মধ্যে বিবাদ বাঁধে। দেহর কর্তৃত্ব নিয়ে শ্মশানের পথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু'বাড়ির লোকজন। মাঝে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনের শববাহী ভ্যান। আহত হন চালক। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যে দেহ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় সেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা।
মৃত ছাত্রী সঞ্চারী সরকারের মামা সমীর দাস বলেন, "জামাই মারা যাওয়ার পর থেকে বোনের শ্বশুরবাড়ি ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেনি। বোন মেয়েকে নিয়ে আমাদের এখানেই থাকে। বেঁচে থাকতে যে মেয়েটাকে ওরা দেখল না, মারা যাওয়ার পর তার দেহ সৎকারের দাবি করে কী করে?"
সমীরবাবুর অভিযোগ, সঞ্চারীর বাবার বাড়ির লোকজনই শববাহী গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। এঘটনায় তারা থানাতে অভিযোগও জানান।
পাল্টা অভিযোগ এনেছে মৃত ছাত্রীর কাকা মনোজ দাস। তিনি বলেন, "আমরা কাউকে মারিনি। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।" তিনি এও বলেন, "আমার ভাইঝির দেহ তার ঠাকুমাকে দেখাবার জন্য আমরা রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে দেহ বাড়িতে নিয়ে যাই। এই কাজ করতে গিয়ে আমরা উলটে আক্রান্ত হয়েছি।"
দু'পক্ষের মারামারির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার শববাহী গাড়ি। ওই সংস্থার কর্মী অঙ্কুর দাস বলেন, "আমরা সমাজসেবার জন্য অত্যন্ত কম মূল্যে বা বিনামূল্যে এই গাড়ি ব্যাবহার করতে দিয়ে থাকি। কিন্তু এসব করতে গিয়ে যদি আমরা নিজেরাই আক্রান্ত হই, গাড়ি সংস্কার করতে ভর্তুকি দিতে হয় তবে এইজাতীয় পরিষেবা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।"
এ ব্যাপারে জলপাইগুড়ি থানার আই সি সঞ্জয় দত্ত বলেন, "অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।"