শেষ আপডেট: 11th August 2024 22:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তির ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্ত টপকে অনেকেই ভারতে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে বলে আগেই বিএসএফকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
সূত্রের খবর, রবিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের রঘুনাথগঞ্জে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন আওয়ামী লিগের এক নেতা। অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই নেতাকে গ্রেফতার করেছে বিএসএফ। ধৃতকে আগামীকাল আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেবে পুলিশ।
বিএসএফ সূত্রের দাবি, জেরায় ধৃত ব্যক্তি নিজেকে আওয়ামী লিগের নেতা হিসেবে স্বীকার করেছেন। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাঁর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও এব্যাপারে আওয়ামী লিগের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকা। এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ২ হাজার ২১৭ কিমি অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি। বাংলাদেশে অশান্তি পরিবেশ তৈরির পর থেকেই এদেশে ঢুকতে পশ্চিমবঙ্গের এই সুদীর্ঘ সীমান্তে শরণার্থীদের ভিড় বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আশঙ্কা, শরণার্থীদের ভিড়ে মিশে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে চাইছে বাংলাদেশের জেল ভেঙে পালানো ২৭ জন জঙ্গি। এ ব্যাপারে বিএসএফকে আগেই সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল অমিত শাহের মন্ত্রক।
বিএসএফ সূত্রের খবর, বাংলাদেশের জেল ভেঙে পালানো ২৭ জঙ্গির মধ্যে রয়েছে আল কায়েদার কিউআইএসের সেকেন্ড ইন কমান্ড ইমানুল হক ওরফে আবু তালহা এবং জেএমবির সোহেল মাফুজ। এই তালহা ভারতে আল কায়েদার মডিউল তৈরির অন্যতম কারিগর। অন্যদিকে সোহেলই হল খাগড়াগড় বিস্ফোরণ ও ঢাকার হোলি আর্টিজেন কাফে হামলার অন্যতম অভিযুক্ত।
এছাড়াও বাংলাদেশের জেল ভেঙে পালানো জঙ্গিদের তালিকায় রয়েছে তালহার ভারতীয় স্ত্রী জেএমবির নারীশক্তি ইউনিটের ফারিয়া আফরিন। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের বিভিন্ন থানা এলাকায় ১০টির বেশি মামলা রয়েছে তালহা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও জেল ভেঙে পালানো বন্দিদের তালিকায় রয়েছে আনসার আল ইসলামের নিয়ামাতুল্লা (হরিদেবপুরের জঙ্গি মডিউলের মাথা) ও তার দুই শাগরেদ আব্দুল আলিম ও জাকারিয়া মণ্ডলও।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শুধু জঙ্গিই নয়, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নরসিংদি, শেরপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, গাজিপুর ও জামালপুর জেল ভাঙার ঘটনা ঘটে। ওই জেলগুলিতে অন্তত ১২০০ কুখ্যাত অপরাধী ছিল। তাদের সিংহভাগ অংশই শরনার্থী সেজে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা দফতর। এরপরই সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।