মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিভি আনন্দ বোস।
শেষ আপডেট: 9th December 2024 23:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দ্বন্দ্ব ভুলে গত সোমবার বিধানসভায় গিয়েছিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান সিভি আনন্দ বোস। সাতদিনের ব্যবধানে আর এক সোমবার রাজ্যপালের ডাকে সাড়া দিয়ে রাজভবনে গেলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, এদিনের সাক্ষাতে রাজ্যের একাধিক বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর। তবে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, বৈঠকের পর এ ব্যাপারে রাজভবনের তরফে সোশ্যাল মাধ্যমে করা একটি পোস্ট।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে ফুুলের স্তবক হাতে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল। রাজভবনের তরফে করা পোস্টের ক্যাপশনে লেখা, 'সত্যিকারের বন্ধুত্ব ফুলের মতো, অন্ধকার যত ঘনায়, তার দীপ্তি ততই বাড়ে। আমরা হয়তো দূরে দূরে রয়েছি, তবুও একে অপরের দিকে হাত বাড়িয়ে আমরা এক বৃক্ষের শাখার মতো যুক্ত।'
বস্তুত, রাজ্যপালের দায়িত্বভার গ্রহণের পর শুরুর দিকে নবান্ন-রাজভবনের সম্পর্ক ভাল থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমশ তিক্ততার দিকে গড়িয়েছিল। বারে বারে সামনে এসেছিল সেই দৃশ্য। কখনও মুখ্যমন্ত্রী কখনও বা রাজ্যপাল প্রকাশ্যে পরস্পরের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন।
অতীতে উপ নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীদের শপথগ্রহণ নিয়ে বিধানসভা বনাম রাজভবনের মধ্যে একাধিকবার জটিলতা দেখা গিয়েছে। কখনও জয়ী প্রার্থীদের বিধানসভার পরিবর্তে রাজভবনে ডেকে শপথবাক্য পাঠ করাতে চেয়েছিলেন বোস, কখনও বা স্পিকারের পরিবর্তে সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকারকে। তা নিয়ে কম বিতর্কও হয়নি।
Thoughts for today
— Raj Bhavan Media Cell (@BengalGovernor) December 9, 2024
'The real friendship is like florensence, it shines better when everything has darkened'.
'Even though we may be parted, we remain connected like the branches of a tree that strech towards each other'. pic.twitter.com/HOkGXwks7F
তবে সম্প্রতি সেই পরিস্থিতিতে বদল এসেছে। গত ২৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬টি বিধানসভায় উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর নিয়ম মেনে বিধানসভার তরফে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শপথের বিষয়টি নিয়ে রাজভবনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। পরিষদীয় দলের তরফেও রাজ্যপালের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। বিধানসভা থেকে স্পিকারের চিঠি যাওয়ার পরই রাজভবনের তরফে জবাবি চিঠিতে জানানো হয়, সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজ্যপাল বোস নিজেই বিধানসভায় গিয়ে নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। কথা মতো হাজিরও হন। ফলে এ যাত্রায় নব নির্বাচিত বিধায়কদের শপথ নিয়ে কোনও জটিলতা তৈরি হয়নি।
এমনকী সম্প্রতি ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো প্রস্তাবেও সম্মতি জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য।
ওয়াকিবহল মহলের মতে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্বন্দ্ব ভুলে সহাবস্থানের বার্তা দিতেই দু'পক্ষ একমঞ্চে আসতে উদ্যোগী হয়েছেন। তবে এই বন্ধুত্ব ২৬ এর বিধানসভা ভোট পর্যন্ত অটুট থাকবে কিনা, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।