দক্ষিণ ২৪ পরগনার জম্বু দ্বীপ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। তখন বঙ্গোপসাগর (Bay Of Bengal) ছিল ভয়ানক উত্তাল। বাতাস জোরে বইছিল, সমুদ্রে বড় বড় ঢেউ উঠছিল। এর মধ্যেই শুরু হয় ট্রলার ডোবার আতঙ্ক।
প্রতীকী ছবি (গুগল)
শেষ আপডেট: 21 June 2025 17:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বঙ্গোপসাগরে ঝড়-জলের মধ্যে মাছ ধরতে গিয়ে পরপর দু’টি ট্রলার (Trawler capsizes in Bay of Bengal) দুর্ঘটনার কবলে পড়ল। তবে সৌভাগ্যবশত দুটি ট্রলারেই থাকা ২৯ জন মৎস্যজীবী প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন। শনিবার ভোররাতে প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) নামখানার দশ মাইল ঘাট থেকে বেরোনো একটি ট্রলারে। ‘এফবি শাকিলা’ নামের ওই ট্রলারে ১৩ জন মৎস্যজীবী ছিলেন। মাছ ধরতে গিয়ে মাঝসমুদ্রে ট্রলারটির তলায় ফাটল ধরে। সেই ফাটল দিয়ে জল ঢুকে ট্রলারটি ডুবতে শুরু করে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জম্বু দ্বীপ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। তখন বঙ্গোপসাগর (Bay Of Bengal) ছিল ভয়ানক উত্তাল। বাতাস জোরে বইছিল, সমুদ্রে বড় বড় ঢেউ উঠছিল। এর মধ্যেই শুরু হয় ট্রলার ডোবার আতঙ্ক। ১৩ জন মৎস্যজীবী প্রাণপণে চিৎকার করতে থাকেন। তাঁদের আর্তনাদ শুনে কাছেই থাকা অন্যান্য ট্রলার দুর্ঘটনাস্থলে এসে পড়ে। দ্রুত তৎপরতার সঙ্গে তারা একে একে সব মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, ওই ট্রলারে করে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে নামখানায়।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘সমুদ্র এতটাই উত্তাল ছিল যে ট্রলারের নিচের অংশ ফেটে জল ঢুকতে শুরু করে। তবে ভাল খবর এই যে, সবাইকে উদ্ধার করা গেছে।’’ মৎস্যজীবীরা বেঁচে ফিরছেন, এই খবর পেয়ে হাঁফ ছেড়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও।
একই দিনে, আরেকটি দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় বঙ্গোপসাগরে। ‘এফবি মা দুর্গা’ নামের একটি ট্রলার ইলিশ ধরতে গিয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের মুখে পড়ে। জানা গিয়েছে, ট্রলারটিরও তলার কাঠ ফেটে গিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। ঘটনাটি ঘটে কেঁদো দ্বীপের কাছে। ওই ট্রলারে ১৬ জন মৎস্যজীবী ছিলেন। তাঁরাও আতঙ্কে পড়ে যান, কারণ ট্রলারটি ক্রমশ ডুবে যাচ্ছিল।
তবে এখানেও কাছে থাকা অন্যান্য ট্রলার দ্রুত এগিয়ে এসে ১৬ জনকেই উদ্ধার করে। তাঁরা এখন পাথরপ্রতিমা ঘাটে ফিরছেন বলে খবর।
মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা সতীনাথ পাত্র জানান, ‘‘এই ট্রলারটি শুক্রবারই নামখানা থেকে রওনা হয়েছিল। সৌভাগ্যবশত, এই ট্রলারেও কেউ নিখোঁজ নেই।’’
গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া দফতর (Weather Department) সমুদ্রকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছিল। সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছিল, যেন কেউ সমুদ্রে না যান। কিন্তু সেই সতর্কতা না মেনেই মৎস্যজীবীরা রওনা দেন মাছ ধরতে। আর তার ফলেই ঘটে এই দুটি দুর্ঘটনা।