শেষ আপডেট: 21st June 2023 08:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১৫০ বছর ধরে কলকাতার বুকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন সেই ঐতিহ্যবাহী যানটি বিলুপ্তপ্রায়। কলকাতার রাস্তায় হাতেগোনা ২-৩ টে রুটে ট্রাম চলে। তাও প্রায় নিভুনিভু অবস্থা। কলকাতার এই প্রাচীন যানটিকে বাঁচাতে এবার কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতার ট্রাম সংরক্ষণের দাবিতে সুলগ্না মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা হাইকোর্টে মামলা করেন। বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে মামলাকারীর পক্ষে জানানো হয়, ১৮৭৩ সালে কলকাতার রাস্তায় প্রথম ট্রাম চালু হয়। ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কলকাতার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। দূষণমুক্ত যান হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ট্রাম চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতার ট্রাম হেরিটেজ হিসাবেই সংরক্ষণ করা উচিত।
মামলাকারীর দাবির পরেই রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে জানান, রাজ্যও চায় ট্রাম সংরক্ষণ করতে। কীভাবে করা যায় সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।
মামলাকারী আদালতে জানান তিনি বর্তমানে ট্রামের কী অবস্থা তা জানতে একটি আরটিআই করেন। রাজ্য যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ১১৬.৬২ কিলোমিটার ট্রামলাইন রয়েছে কলকাতায়। তার মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৩৩ কিলোমিটার লাইনে ট্রাম চলে। তিনটি রুটে এখন ট্রাম চলে। ৬ টা ট্রাম ডিপো রয়েছে। সবগুলোই শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।
মামলাকারীর অভিযোগ, বেলগাছিয়া আর টালিগঞ্জ ডিপোর জায়গা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি সংস্থাকে। সেখানে প্রোমোটিং হচ্ছে। কেন বিক্রি করা হয়েছে, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে মামলাকারী বলেন, কর্মচারীদের বকেয়া মেটাতে, লোন শোধ করতে ও ইলেকট্রিক বাস কিনতে এই টাকা ব্যবহার হয়েছে।
মামলাকারীর বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি বলেন, কলকাতার জনগণের ট্রাম নিয়ে একটা আবেগ রয়েছে। তাই এই ট্রামকে রক্ষার জন্য নতুন প্রযুক্তি আনা দরকার। ট্রাম নষ্ট করে ফেলা কোনও কাজের কথা নয়। সংরক্ষণ ও তাকে নতুন করে ব্যবহার করার কথা ভাবা উচিত।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, টয় ট্রেন যেভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে (দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে), সেই ভাবে কলকাতার ট্রাম সংরক্ষণ করা যায়। পর্যটনকে প্রধান্য দিলে কলকাতার হেরিটেজ বাঁচানো যাবে ও সরকারের রোজগারও হবে।
কীভাবে ট্রাম বাঁচানো যায় সেই বিষয়টা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই কমিটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ সদস্যরা থাকবেন। তাঁরা ট্রামের বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আদালতকে জানাবে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে কমিটি গঠন করে সেই কমিটিতে কারা থাকবে তা আদালতকে জানাতে হবে।
বড়বাজারে আগুন! দিনের ব্যস্ত সময়ে হুলস্থূল শহরে, লড়ছে দমকলের ৫ ইঞ্জিন