শেষ আপডেট: 6 April 2023 10:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে চলবে মহাজাগতিক ম্যাজিক। রাতের আকাশে চাঁদের পাশে দেখা যাবে শনি (Saturn), মঙ্গল (Mars) ও শুক্র (Venus) গ্রহকে (Planets)। মাসজুড়ে মহাজাগতিক মহামিলন চলবে রাতের আকাশে। এমন মহাজাগতিক সংযোগকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
জানা গেছে, এপ্রিলের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হবে এই মহাসংযোগ। চাঁদ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে শুক্রের দিকে। ২৩ এপ্রিল সন্ধেয় চাঁদ ও শুক্রকে খুব কাছাকাছি পাশাপাশি দেখা যাবে। শুক্রের মাত্র পাঁচ ডিগ্রি উপরেই থাকবে চাঁদ। পৃথিবী থেকে দেখলে তাদের খুব কাছাকাছি একসঙ্গে মনে হবে।
২৩ এপ্রিলের পর থেকে চাঁদ এগিয়ে যাবে মঙ্গলের দিকে। সন্ধে নামলেই রাতের আকাশের জ্বলজ্বলে চাঁদের নীচেই লাল গ্রহকে দেখা যাবে। এরপর কাছে আসবে শনি।
নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরি সূত্রে খবর, ২৬ ও ২৭ তারিখে প্রায় একইসঙ্গে দেখা যেতে পারে চাঁদ, মঙ্গল, শনি ও শুক্রকে। এপ্রিলের আকাশ আরও এক ‘মহাজাগতিক দৃশ্য’-এর সাক্ষী থাকবে। সৌরজগতের সব থেকে ছোট গ্রহ বুধকে এই এপ্রিলেই সব থেকে ভাল ভাবে দেখা যাবে।
মহা-সংযোগ আসলে কী? সৌরমণ্ডলের গ্রহ এবং পৃথিবীর উপগ্রহকে একই সঙ্গে প্রায় একই সরলরেখায় বা কাছাকাছি দেখা চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। খুব সহজে ব্যাপারটা বোঝানো যায়। ধরা যাক, বড় মাঠ। ক্রিকেট খেলার মাঠের মতো সমান নয় কিন্তু। এবড়ো খেবড়ো, অসমান, উঁচু নিচু মাঠ। এই মাঠের দুই দিক দিয়ে দু’জন খেলোয়াড় বৃত্তাকারে ঘুরছে। একজনের সময় লাগছে ১২ মিনিট, অন্যজনের ২৯ মিনিট। এবার ধরা যাক ক্যামেরায় একটা ফিল্ম রয়েছে। দুজনের ছবি তুলতে হবে। কিন্তু দুজনকে কিছুতেই এক ফ্রেমে ধরা যাচ্ছে না। কারণ দুজনের ছোটার বেগ আলাদা। কখনও একজন উত্তরে, তো অন্যজন দক্ষিণে। একজনে পূর্বে তো অন্যজন পশ্চিমে। পর পর একই ফ্রেমে পেতে গেলে অন্তত ১২-১৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতেই হবে। এমন একটা সময় আসবে যখন দুজনকে একই ফ্রেমে ক্যামেরাতে ধরা যাবে।
গ্রহ-উপগ্রহকে একই সঙ্গে কাছাকাছি বা একই রেখায় দেখতে পাওয়ার ব্যাপারটাও অনেকটা সে রকমই। এদের কক্ষপথ আলাদা, কক্ষপথের গতি, সূর্য থেকে দূরত্ব আলাদা। তাই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে করতে ঠিক কোন সময়টাতে এরা একই সঙ্গে কাছাকাছি ধরা দেবে সেটা বলা সম্ভব নয়। কখনও এই সংযোগ হতে ৪০০ বছর পেরিয়ে যায়, তো কখনও আরও বেশি। যখন সেই সংযোগ ঘটে সেই সময়টাকেই বিরলতম মুহূর্ত হিসেবে ধরেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদ ও অন্য গ্রহদের কাছাকাছি আসার ঘটনাও তাই। এই মহাজাগতিক ঘটনাকে তাই বিরল মহাজাগতিক মহামিলন বলা হচ্ছে।