শেষ আপডেট: 6th January 2025 17:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক সময় যে ভারত সেবাশ্রমের ভূমিকা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন, বছর ঘুরতেই সেই সংঘেরই প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুখ্যমন্ত্রী। বললেন 'প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যে ভাবে তাদের ভলান্টিয়াররা কাজ করে তার কোনও বিকল্প নেই। রামকৃষ্ণ মিশন যেমন শিক্ষায় এগিয়ে, ভারত সেবাশ্রম সংঘ তেমন সেবায় এগিয়ে। ঝড়, জল, সাইক্লোন, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আর কাউকে না পেলে ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আপনারা পাবেনই।'
সোমবার গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সংঘে গিয়ে সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজের ছবিতে আরতি করেন মমতা। এরপর মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করায় সংঘকে ধন্যবাদও জানান মমতা। বলেন, 'ভারত সেবাশ্রম সংঘ শুধু গঙ্গাসাগর মেলা নয়, তাদের প্রচুর ভলান্টিয়ার এখানে কাজ করে। গঙ্গাসাগরে তারা যে ভাবে কাজ করে সে জন্য ভারত সেবাশ্রম সংঘকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।'
যদিও সংঘের আশ্রমে দাঁড়িয়ে তাদেরই একাংশকে বিঁধতে ছাড়লেন না। নিজস্ব ঢঙে মমতা বলেন, 'একটা দুটো জায়গায় কয়েকজন লোক আছেন যাঁরা হয়তো কাজটা করেন না। ৯৯ শতাংশ লোক কাজটা করেন। আমি তাঁদের সবাইকে, স্বেচ্ছাসেবক, তীর্থযাত্রীকে আমার প্রাণ ভরা অভিনন্দন জানাই।'
যে সংঘের নামের সঙ্গেই 'সেবা' জড়িয়ে রয়েছে, তারই একাংশ নাকি সেবার কাজ করেন না। এমনই অভিযুক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখানেই প্রশ্ন উঠতে পারে, আকারে-ইঙ্গিতে মুখ্যমন্ত্রী কাদের দিকে আঙুল তুললেন? অনেকের মতে, ভারত সেবাশ্রম সংঘের এমন অনেকেই আছেন যাঁরা মমতার চক্ষুশূল। কয়েকটা ঘটনা সামনে আনলে বোঝা যাবে। প্রথমত, কার্তিক মহারাজ। যাঁর উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, 'ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম । কিন্তু যিনি তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেবেন না বলেন, তাঁকে সাধু বলে মনে করি না ৷ এর অর্থ উনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আমি চিহ্নিত করেছি কে কে করেছেন।' যার পরপরই সমালোচনা শুরু হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে।
এরই রেশ ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হন স্বামী আত্মস্থানন্দ মহারাজ। কটাক্ষ করে বলেন, 'উনি একটা পাগলি। তাঁর কথার কোনও ঠিক নেই। মুখ্যমন্ত্রীর যেটা বলা উচিত, সেটা তিনি বলেন না। বরং, প্রধানমন্ত্রীকে উলটোপালটা কথা বলছেন। এটা মাথা খারাপ ছাড়া আর কী হবে!'
অন্যদিকে, লোকসভা ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিধায়কের সেই মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন স্বামী প্রদীপ্তানন্দজি। যিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান। ঘটনার পর থেকে তিনিও মমতার চক্ষুশূল।