শেষ আপডেট: 16th January 2025 12:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্যালাইন বিপর্যয়ের ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সিনিয়র সচিব চৈতালি চক্রবর্তীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। বুধবার রাতেই স্বাস্থ্য ভবনের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, চৈতালির পরিবর্তে ওষুধ সংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শুভাঞ্জন দাসকে।
এই ঘটনায় ফের নতুন করে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সরকার ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বুধবারই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে চৈতালির সঙ্গে দেখা করেন। তার পরে শুভেন্দু অভিযোগ আনেন, স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে তিনি যে প্রশ্নগুলি করেছিলেন, তার সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি চৈতালি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় এবং বিরোধীদের সামনে সরকারের অস্বস্তি বেড়ে যাওয়ার কারণে চৈতালিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই নিয়ে বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির বক্তব্য, ‘বিষাক্ত স্যালাইনগুলি বাতিল করা হলেও তা কীভাবে রোগীদের ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হয়েছিল, তার কোনও স্পষ্ট উত্তর উনি (চৈতালি চক্রবর্তী) দিতে পারেননি।’ বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষের অভিযোগ, সরকারি আধিকারিকদের বিরোধীদের থেকে দূরে রাখার বার্তা দিতেই চৈতালিকে সরানো হয়েছে।
সরকারের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, শুভেন্দুর স্বাস্থ্য ভবনে যাওয়ার আগেই বিশেষ সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিবকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। মঙ্গলবার রাতেই শুভাঞ্জনকে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত সপ্তাহের শেষে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় উঠে আসে, স্যালাইনের গুণগত ত্রুটির কারণেই বিপত্তি ঘটেছে। আরও তিন প্রসূতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থার ত্রুটিপূর্ণ পণ্যই সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছিল। এই ঘটনার পর স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর। এর পরেই চৈতালিকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।
স্বাস্থ্য দফতরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন চৈতালী। ‘ড্রাগ অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট’ দফতরের সচিব হিসেবে ওষুধ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভাল করতেন তিনি। কোন সংস্থার কাছ থেকে ওষুধ কেনা হবে বা সরবরাহ করা হবে, তা নির্ধারণের দায়িত্ব ছিল তাঁর। স্যালাইন-কাণ্ডের পরে তাঁর কাজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে সূত্রের খবর।