ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে এই স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে। তার পরপরই আমজনতার জীবন স্মার্ট হওয়া তো দূর কি বাত, বরং আরও বেশি দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
স্মার্ট মিটার
শেষ আপডেট: 13 June 2025 07:56
স্মার্ট মিটার, (Smart Meter) গোটা রাজ্যবাসীদের কাছে এযাবৎ যেন ত্রাসের নাম। নাগরিকদের জনজীবনকে স্মার্ট ও সহজতর করতে রাজ্য এবং কেন্দ্রের যৌথ প্রকল্প হিসেবে স্মার্ট মিটারের চিন্তা-ভাবনা পাস হয়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে এই স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে। তার পরপরই আমজনতার জীবন স্মার্ট হওয়া তো দূর কি বাত, বরং আরও বেশি দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখুন
বিদ্যুতের বেলাগাম বিল (Electric Bill), সেই বিলের হিসেব সংক্রান্ত সমস্যা, এহেন ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠে আসছে প্রতিদিন। এই স্মার্ট মিটার কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলেই জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দ্য ওয়াল এই স্মার্ট মিটার সম্পর্কে বেশ কয়েকজন মানুষের কাছে এই স্মার্ট মিটার কী বা কেন তা নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে। দেখা গিয়েছে সিকিভাগের এ ব্যাপারে কোনও ধারণাই নেই।
কী এই স্মার্ট মিটার? কীভাবে এর বিল দেখতে হয়? উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই। এখানেই শেষ নয়, বয়স্ক মানুষরা তো মজার ছলে এ কথাও বলছেন যে, মিটার স্মার্ট হলেও তাঁরাই এখনও ততটা স্মার্ট নন যে মিটারটি হ্যান্ডেল করতে পারবেন। কেউ কেউ বলছেন প্রতিদিন মোবাইলে ইলেকট্রিক বিল সংক্রান্ত ম্যাসেজ ঢুকছে, যা তাঁদের কাছে এক কথায় বিভ্রান্তিকর। মোদ্দাকথা আমজনতা এই স্মার্ট মিটারের পাল্লায় পড়ে হিমশিম খাচ্ছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, দ্য ওয়াল কথা বলেছে, এবেকা (অল বেঙ্গল ইলেক্ট্রিসিটি কনসিউমার) এর সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, স্মার্ট মিটারকে হাতিয়ার করে ভারত সরকার বিদ্যুতের বন্টন ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণ করতে চাইছে।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎ বিল ২০২২ নিয়ে এসেছিল, কিন্তু সেই সময় পার্লামেন্টে এই বিল পাস করাতে পারেনি। আর পারেনি বলেই কেন্দ্রীয় সরকার এই সম্পূর্ণ বিষয়টিকে 'রিভেম্প স্কিম' বলে ঘোষণা করেন। তিনি সরকারকে প্রশ্ন করছেন, কেন এত তড়িঘড়ি স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ হচ্ছে? সুব্রতবাবুর ব্যাখ্যা, সরকারের তরফে স্মার্ট মিটার বসানোকে বাধ্যতামূলক বলা হলেও, আইনের কোথাও স্মার্ট মিটার বসানো বাধ্যতামূলক নয়। একই সঙ্গে সিকিওরিটি ডিপোজিট জমা রাখার ব্যাপারও বিদ্যুৎ আইনের কোথাও উল্লেখ নেই।
কারও বাড়িতে স্মার্ট মিটার লাগিয়ে যাওয়ার পর যদি সেই স্মার্ট মিটার আবার তুলে নেওয়ার দাবি জানানো হয়, সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে কী ব্যবস্থা রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে সুব্রতবাবু জানান- বিদ্যুৎ আইনের ৫৫ নম্বর ধারা এবং ৪৭ নম্বর ধারার সাহায্যে সাধারণ মানুষ স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত অভিযোগ ও স্মার্ট মিটার খুলে নেওয়ার আর্জি জানাতে পারেন।
বলা বাহুল্য, ইতিমধ্যেই রাজ্য জানিয়েছে, আপাতত স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ স্থগিত রাখা হচ্ছে। সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেই সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত। এখন দেখার, জনস্বার্থে সরকার ভবিষ্যতে ঠিক কী পদক্ষেপ নেয়।