শেষ আপডেট: 20th February 2024 19:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত সপ্তাহে বিধানসভায় গিয়েছিলেন যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে যখন বেরিয়ে আসেন তখন বেশ সাবলীল দেখাচ্ছিল তাঁকে। হাল্কা স্কাই ব্লু কালারের সামান্য ওভারসাইজড স্ট্রাইপ শার্ট পরা। কানে দুটো সিলভার কালারের রিং। মুখে হাল্কা মেক আপ।
দ্য ওয়ালের প্রশ্নের জবাবে মিমি বলেছিলেন, তাঁর পদত্যাগ পত্র দিতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ, তাঁর আর ভোটে লড়ার ইচ্ছা নেই। ঢের হয়েছে। কিন্তু লোকসভা থেকে ইস্তফা দিতে হলে তো স্পিকারকে চিঠি দিতে হয়! মিমির জবাব ছিল,‘পার্টি সুপ্রিমো আগে অনুমতি দিক।’ আর যদি তা না দেন দিদি? উত্তরে মিমি বলেছিলেন, “তাহলে ওই মাছ-ভাতটাই খেতে হবে।” অর্থাৎ মিমি বোঝাতে চেয়েছিলেন, তাহলে আবার ভোটে লড়তে হবে।
মিমির মাছ-ভাত
— The Wall (@TheWallTweets) February 20, 2024
#mimichakraborty #MamataBanerjee #TMC #parliament pic.twitter.com/N15zUtJKpB
আসল কৌতূহলের বিষয় এখানেই। মিমিকে ফের যদি মাছ-ভাত খেতে হয়, তাহলে কি আসন পাতা হবে যাদবপুরেই? নাকি অন্য কোনও স্থানে?
লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাকে কোথায় প্রার্থী করবেন, তা আগে থেকে জানা খুবই কঠিন ব্যাপার। দলের অনেক তাবড় নেতার কাছে সে ব্যাপারে হদিশ থাকে না। তবে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা নন, প্রার্থী বাছাইয়ে ভূমিকা থাকছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের দাবি, চব্বিশের ভোটে যাদবপুর থেকে মিমিকে প্রার্থী করার বিষয়টি এখনও ষোলো আনা নিশ্চিত নয়। বরং অন্য আসনের কথাও ভাবছে দল। তা হতে পারে গঙ্গার পশ্চিম তীরের আসন হুগলি। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত নয়। তা বদল হতেই পারে। তবে ওই সূত্রের মতে, এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই যে মিমির নাম হুগলির জন্য বিবেচনায় রয়েছে।
কথায় বলে, গঙ্গার পশ্চিম কূল বারাণসী সমতুল। তৃণমূলের জন্য অবশ্য এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা হল মিশ্র। হাওড়া ও শ্রীরামপুর আসন দুটি গত লোকসভা ভোটে জিতেছিল বাংলার শাসক দল। কিন্তু হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে উনিশের ভোটে তৃণমূলকে ৭৩ হাজার ভোটে পরাস্ত করে জিতেছিলেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়।
এই আসনেও দেখা গিয়েছিল, বামেদের ভোট ধুয়ে মুছে চলে গিয়েছিল বিজেপির দিকে। হুগলিতে টানা দু’দশক ধরে সাংসদ ছিলেন সিপিএমের রূপচাঁদ পাল। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে তাঁকে পরাস্ত করে জিতেছিলেন তৃণমূলের রত্না দে নাগ। পরের ভোট অর্থাৎ ২০১৪ সালেও জিতেছিলেন রত্না। তখনও পর্যন্ত হুগলিতে ভাল সংখ্যায় ভোট ধরে রাখতে পেরেছিল সিপিএম। চোদ্দ সালের লোকসভা ভোটে হুগলিতে ৩১.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন বামেরা। আর বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ১৬ শতাংশ ভোট। কিন্তু উনিশের ভোটে দেখা যায়, বিজেপির ভোট ৩০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ। আর বামেদের ভোট কমে হয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ।
সেদিক থেকে হুগলিতে লড়াই এবার সহজ নয়। তবে বাংলার শাসক দলের জন্য সিলভার লাইনিং হল হুগলিতে লকেটকে নিয়ে স্থানীয় বিজেপির মধ্যেই অনেকের ক্ষোভ রয়েছে। কদিন আগে প্রকাশ্যে বিদ্রোহও দেখা গেছে সেখানে। হতে পারে সেই সুযোগটাই নিতে চাইছে তৃণমূল। টলিপাড়ার একদা অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিতে পারে আর এক অভিনেত্রীকে।