শেষ আপডেট: 27th February 2024 21:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলার ঘটনায় রায় জানাতে এজলাসের বাইরে বেরিয়ে এলেন অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক সালিম শাহী।মঙ্গলবার মেদিনীপুর জেলা আদালতের ঘটনা।
২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি। বেলপাহাড়ির শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে থাকা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছিল মাওবাদীরা। মাও হামলায় সেদিন নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন জওয়ান।
মঙ্গলবার দুপুরে ২৩ জনকে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। কিন্তু কাঠগোড়ায় ২২ জন। এজলাসের বাইরে দাঁড়িয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স। তাতেই শয্যাশায়ী আরও এক অভিযুক্ত বুদ্ধেশ্বর মাহাত ওরফে বুদ্ধদেব মাহাত। কিডনির মারণ রোগে আক্রান্ত বছর ৩৬ এর বুদ্ধদেব। তাকেই রায় শোনাতে এদিন এজলাসের বাইরে বেরিয়ে এলেন বিচারক।
অ্যাম্বুলেন্সের কাছে গিয়ে অভিযুক্তর উদ্দেশে বিচারককে বলতে শোনা গেল, ‘আপনি দোষী। আপনাকে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হল।’
এজলাসে বসেই বিচারক রায় দান করেন। এটাই দস্তুর। আইনজীবীরা বলছেন, অভিযুক্তকে নিজের কানে শুনতে হয় আদালতের রায়। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত যেহেতু শয্যাশায়ী, তাই তাকে রায় শোনাতে এজলাস ছেড়ে বাইরে আসেন বিচারক। জেলা আদালতের ইতিহাসে যা নজিরবিহীন বলেই দাবি আইনজীবীদের একাংশের।
আদালত সূত্রের খবর, ২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা নাগাদ ইএফআর ক্যাম্পে হানা দেয় মাওবাদীরা। একের পর এক জওয়ানকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার পাশাপাশি ক্যাম্পে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। মৃত্যু হয় ২৪ জন জওয়ানের। অগ্নিদগ্ধ হন আরও ২জন জওয়ান। জওয়ানদের পাল্টা প্রতিরোধে ৫জন মাওবাদীরও মৃত্যু হয়। তবে মাওবাদীরা সংখ্যায় বেশি থাকায় যাওয়ার সময় ক্যাম্প থেকে জওয়ানের অস্ত্র লুঠও করে নিয়ে যায়।
ঘটনার তদন্তে নেমে মাও নেতা রঞ্জন মুন্ডাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একে একে বাকিদেরও গ্রেফতার করা হয়। তবে হামলার অন্যতম অভিযুক্ত মাও নেত্রী সুচিত্রা মাহাত পলাতক ছিলেন। পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন সুচিত্রা।
প্রথমে এই মামলা শুরু হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে। পরর্বতীতে সেই মামলা শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর আদালতে। এই মামলায় মোট অভিযুক্ত ছিল ২৪ জন। তাদের মধ্যে সুদীপ চোংদার নামে এক মাওবাদীর আগেই মৃত্যু হয়েছে। বাকি ২৩ জনকে এদিন দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।