শেষ আপডেট: 26th August 2020 03:25
নিট-জয়েন্ট পরীক্ষা হবে, জানিয়ে দিল ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি, রাজ্যগুলিকে সহায়তার নির্দেশ
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনাভাইরাস সংকটেও জয়েন্ট ও নিট পরীক্ষা হবে, এ বিষয়ে যাতে সমস্ত রাজ্য তাদের পরীক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়-- এমনই নির্দেশ দিল জাতীয় পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব এ বিষয়ে সমস্ত রাজ্যকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, রাজ্যগুলিতে যাতে এক জেলা থেকে আর এক জেলায় যাতায়াত সহজ করা যায়, সে বিষয়ে যেন জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয় আগে থেকে। কিন্তু সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গতির নিরিখে চিন্তাভাবনা করে বেশ কিছু রাজ্য থেকে জয়েন্ট এবং নিট পরীক্ষা স্থগিত করার আর্জি ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে কেন্দ্রের দরবারে। মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল জানিয়েছিলেন গোটা বিষয়টি পুনরায় খতিয়ে দেখছেন তিনি। আজ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকেও এ বিষয়টি আলোচিত হয়। কেন্দ্রকে বার্তা দেওয়া হয়, এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা না নেওয়ার। এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকের শুরুতেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করব, তারা যাতে সুপ্রিম কোর্টে পরীক্ষা স্থগিতের জন্য আবেদন করেন। তা না হলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব। দরকার হলে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।” কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পোখরিয়াল জানিয়েছেন, জয়েন্টের ৮৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী ইতিমধ্যেই অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে নিয়েছেন। ২০২০ সালের জয়েন্টের জন্য মোট ৮.৮৫ লাখ পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পোখরিয়াল। এরমধ্যে ৭.২৫ লাখ পড়ুয়া অ্যাডমিট হাতে পেয়েছেন ডাউনলোড করে। এঁদের কথা ভেবেও সরকার পরীক্ষা বহাল রাখার সিদ্ধান্তের পথে যেতে চাইছে বলে শিক্ষা মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিট পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসেই হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে বলা হয়েছিল, সব পরীক্ষাই হবে জুলাইতে। জয়েন্ট পরীক্ষার দিন ফেলা হয়েছিল ১৮ থেকে ২৩ জুলাই এবং নিট পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছিল ২৬ জুলাই। কিন্তু, জুলাই মাসেও দেশজুড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরীক্ষা ফের পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ঠিক হয় সেপ্টেম্বরে ১-৬ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ১১ জন ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, “করোনা সংক্রমণের কারণে জীবন থমকে থাকবে না। স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কারণে এমনিতেই ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তাদের আরও একটা বছর নষ্ট হবে। সেদিকটা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” শেষমেশ আগামী ১ সেপ্টেম্বর আয়োজিত হওয়ার কথা নিট ও জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষার। পড়ুয়াদের কেরিয়ার নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই পরীক্ষার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে করোনা মহামারী। একাধিক রাজ্য এই পরীক্ষার তুমুল বিরোধিতায় সরব হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষামন্ত্রীরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পরীক্ষা পিছোনোর আর্জিও জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে পরীক্ষার হলে পৌঁছবেন তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে আজ মুখ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে। অন্যবার ট্রেন চালু থাকার ফলে একটা বড় অংশের পরীক্ষার্থী রেলের মাধ্যমেই যাতায়াত করেন। কিন্তু এবার সেই সুযোগ নেই। কিন্তু সমস্ত যুক্তির পরেও কেন্দ্র পিছু হটবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।