ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 21 April 2025 21:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কথা ছিল সন্ধে ৬টা নাগাদ যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করবে এসএসসি (SSC)। দাবি পূরণে বেলা ১২টা নাগাদ সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে মিছিল করে এসএসসি ভবনের সামনে পৌঁছন চাকরিহারা হাজার হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা। ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ন'টা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এসএসসি ভবনের সামনেই বিক্ষোভে অনড় আন্দোলনকারীরা। যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত এসএসসি ভবন ঘেরাও করে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
ভেতরে আটকে এসএসসির চেয়ারম্যান-সহ কর্মীরা। সূত্রের খবর, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দফতরের কর্মীদের জন্য বাইরের হোটেল থেকে খাবার আনা হয়েছিল। তবে আন্দোলনকারীরা সেই খাবার ভেতরে নিয়ে যেতে দেননি। টেনে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় হোটেলের সেই খাবার। চাকরিহারা শিক্ষকদের সাফ কথা, "আমাদের পেটের ভাত কেড়ে ওরা খাবে? আমরা তো সারাদিন না খেয়ে এখানে রয়েছি। যোগ্য তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত ওদেরও খেতে দেব না!"
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এসএসসি ভবনের কয়েকজন কর্মী বাইরে বেরানোর চেষ্টা করেন। চাকরিহারাদের তরফে আগে থেকেই এসএসসি ভবনের সব কটি গেট অবরুদ্ধ করে দেওয়ায় কর্মীরা অবশ্য বাইরে বেরোতে পারেননি। উপরন্তু তাঁদের দেখে চাকরিহারাদের দিক থেকে চোর, চোর স্লোগানও তোলা হয়।
চাকরিহারারা সাফ জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে অর্থাৎ যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারদের কায়দায় তাঁরাও এখন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এসএসসি ভবনের সামনে ঘেরাও অবস্থান চালিয়ে যাবেন। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ। তবে কসবা কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশও ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে।
গত ১১ এপ্রিল বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) এবং এসএসসি (SSC) চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকের পর জানা গিয়েছিল, আইনি পরামর্শ নিয়ে দেড় সপ্তাহের মধ্যে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ্যে আনতে পারে এসএসসি। সেই হিসেব মোতাবেক ২১ এপ্রিল সোমবার পৃথক তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের। এদিন বিকেলে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল। রাত আটটা নাগাদ তাঁরা বাইরে এসে জানান, থার্ড কাউন্সেলিং পর্যন্ত যাঁরা রয়েছেন তাঁদের বৈধ বলে ধরা হচ্ছে।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয় এসএসসি চত্বরে। চাকরিহারাদের বক্তব্য, আদালতে হলফনামা দিয়ে এসএসসি বলেছিল, ৬ হাজার ২০০-র বেশি কিছু চাকরি সুপারিশের ভিত্তিতে হয়েছিল। অর্থাৎ সেগুলি বাদে বাকিগুলি বৈধ। তাহলে সেদিন কি এসএসসি ভুল তথ্য দিয়েছিল? নাকি অযোগ্যদের আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে চতুর্থ কাউন্সেলিং থেকে বাকি তালিকা অযোগ্য বলে বলছে?
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বা এসএসসি চেয়ারম্যানের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। সূত্রের খবর, তালিকা প্রকাশের জন্য আরও কিছুটা সময় চেয়েছে এসএসি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে যোগ্য ও অযোগ্যদের প্রকৃত তালিকা না প্রকাশ করা পর্যন্ত ঘেরাও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারারা। সব মিলিয়ে এসএসসি ভবনের সামনে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।