শেষ আপডেট: 9 September 2023 07:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১৭ বছর বয়সি নাবালিকাকে টানা আট বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল দাদুর বিরুদ্ধে (teen accused grandfather of raping)। ঘটনার জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল কিশোরী। কিন্তু কিশোরীর সন্তানের সঙ্গে অভিযুক্তের ডিএনএর কোনও মিল পাওয়া গেল না। আর তারপরেই বৃদ্ধকে সসম্মানে মুক্তি দিল আদালত। যদিও ততদিনে ৫ বছর জেল খেটে ফেলেছেন তিনি (Grandfather held not guilty)।
ঘটনাটি মুম্বইয়ের (Mumbai minor rape)। একটি বিশেষ পকসো আদালত ৬০ বছর বয়সি ওই প্রৌঢ়কে নির্দোষ বলে ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে আদালত এ কথাও জানিয়েছে, অভিযোগকারিণী সেই সময় আরও একজনের নামে অভিযোগ এনেছিল। তাঁর সঙ্গেও ডিএনএ রিপোর্ট মেলেনি, যা থেকে একপ্রকার স্পষ্ট, সম্পূর্ণ অন্য, তৃতীয় কোনও ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ছিল ওই কিশোরীর, যাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই আড়াল করতে চাইছিল সে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, অভিযোগকারিণী স্বীকার করে নিয়েছে, ঋতুস্রাব না হওয়ার পর সেকথা সে তার এক বন্ধুকে জানিয়েছিল এবং সেই বন্ধুর মায়ের সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়েছিল সে। 'প্রশ্ন হল, নির্যাতিতা কেন তখন তার সঙ্গে হওয়া এরম ভয়ঙ্কর অন্যায়ের কথা বন্ধু কিংবা বন্ধুর মাকে জানায়নি,' প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি পাটিল।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগকারিণী একথাও মেনে নিয়েছে, সে মাঝে মাঝেই বাড়ি থেকে দূরে অন্য জায়গায় গিয়ে কয়েকদিনের জন্য থেকে আসত। এমনকী, ২০১৫ সালে অভিযুক্ত দাদু সেই কারণে নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলেন থানায়। নাবালিকা তার অভিযোগপত্রে জানিয়েছিল, ঘুমিয়ে থাকার সময় দাদু প্রায়ই তাকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিতেন। এমনকী, তাকে নিয়মিত মারধর করতেনও। তাতে সে এমন চিৎকার করত, যা শুনে পাড়া-প্রতিবেশীরা ছুটে আসতেন।
বিচারপতি জানিয়েছেন, মেডিকেল রিপোর্টে নাবালিকা শরীরে আটটি পোড়ার চিহ্ন মিলেছে। কিন্তু এমন ভয়ঙ্কর নির্যাতনের পরেও পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে কেন সে ব্যাপারে নাবালিকা কিছু জানাল না, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। এমনকী, বন্ধু কিংবা তার মাকেও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারেই রেখেছিল সে। এর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলেই দাবি আদালতের।
নিগৃহীতা আদালতে জানিয়েছিল, ঠাকুমার মৃত্যুর পর থেকে দাদুই তার খেয়াল রাখত। আর তখনই মারধর এবং সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে ধর্ষণও করত দাদু। টানা ৮ বছর ধরে এই নারকীয় নির্যাতন চললেও সে কথা তখন সে কাউকেই জানায়নি। কিন্তু ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর শারীরিক পরীক্ষায় যখন ধরা পড়ে সে অন্তঃসত্ত্বা, তখন ভয়ে দাদুকে সে তা জানাতে পারেনি বলে দাবি করেছিল কিশোরী। এমনকী, দাদুর ভয়েই সে পুলিশকে অন্য দুই যুবকের নাম বলেছিল বলে জানিয়েছে অভিযোগকারিণী।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, প্রমাণ থেকে বোঝা যাচ্ছে, অন্য কারও সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল নাবালিকা। 'স্পষ্টতই, অভিযোগকারিণী গত কয়েকদিন ধরেই তার দাদুর হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। কেন সেই সময় সে সিগারেটের ছ্যাঁকা কিংবা যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে পুলিশে খবর দেয়নি, তার স্বপক্ষে সে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি,' জানিয়েছেন বিচারপতি।
এরপরেই অভিযুক্ত দাদুকে নাতনিকে ধর্ষণ করার অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে আদালত।
লিঙ্কে ক্লিক করলেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট! সিবিএসই বোর্ডের নামে নয়া প্রতারণা