চাকরি ফেরতের দাবিতে রাতভর বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান চাকরিহারাদের। শুক্রবার সকালে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টায় ফের উত্তেজনা।
বিকাশ ভবনে চলছে আন্দোলন।
শেষ আপডেট: 16 May 2025 11:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলনে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত রণক্ষেত্র পরিস্থিতি হয় সল্টলেকে। আজ, শুক্রবার সকাল ফের উত্তেজনার পরিস্থিতি বিকাশ ভবনের সামনে। রাতভর রাজ্যের শিক্ষাভবন বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালানোর পর শুক্রবার সকাল হতেই পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। আন্দোলনকারীদের একাংশ হঠাৎ করেই ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ তখনই হস্তক্ষেপ করে এবং আন্দোলনকারীদের পেছনে ঠেলে দেয়। এই ঘটনায় ফের সাময়িকভাবে ধস্তাধস্তি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
চাকরিহারা আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট বক্তব্য, দাবি না মানা পর্যন্ত কোনও অবস্থাতেই তাঁরা বিক্ষোভ তুলে নেবেন না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বিকাশ ভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান শুরু করেন চাকরি হারানো প্রার্থীরা। পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই তাঁরা অবস্থান চালিয়ে যান রাতভর। ব্যানার, পোস্টার ও স্লোগানে তাঁরা তাঁদের দাবি তুলে ধরেন।
সকাল থেকেই ফের শুরু হয় কর্মসূচি। সকলে একসঙ্গে গলা মিলিয়ে জাতীয় সঙ্গীতও গান শিক্ষকরা। ঠিক যেন স্কুলের প্রেয়ার।
ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। লালবাজারের নির্দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। যদিও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত একচুলও নড়বেন না।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরি ফিরে পেতে অবস্থানে বসেছিলেন 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। অভিযোগ, আচমকা পুলিশকর্মীদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয় বিকাশ ভবনের সামনে।
রাত ৮টা নাগাদ সাইরেন বাজিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে বলপ্রয়োগ করে পুলিশ। যার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। রাস্তার উপর শুয়ে পড়েন অনেকে। কিন্তু তাঁদেরও টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেওয়া হয় এলাকা থেকে। একইসঙ্গে সকাল থেকে বিকাশ ভবনের যে কর্মীরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের বার করে আনে পুলিশ। তাঁরাও অনেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
যদিও পুলিশের বক্তব্য, প্রথম থেকেই আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার 'অনুরোধ' করা হলেও তাঁরা অবস্থান ছেড়ে ওঠেননি। যাঁরা সরকারি ভবনে কাজ করেন তাঁদের বের করার চেষ্টা করলে চাকরিহারারা নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন। সেই ইট-পাটকেল থেকেই আন্দোলনকারীরা আহত হয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য তারা কেবল লাঠি দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।
গতকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোটা পরিস্থিতির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আন্দোলনকারী চিন্ময় মণ্ডল-সহ অন্যান্য আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশের এহেন পৈশাচিক অত্যাচারের প্রতিবাদে গোটা বাংলার মানুষ যেন পথে নামেন। শুক্রবার রাজ্যজুড়ে ধিক্কার দিবস পালন ও যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।