শেষ আপডেট: 5th February 2025 21:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শিল্পপতি মুকেশ অম্বানি, সজ্জন জিন্দাল, সঞ্জীব গোয়েনঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়া থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের প্রায় দু'হাজার শিল্পপতি উপস্থিত হয়েছেন কলকাতায় বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে। ইতিমধ্যে তাঁদের অনেকে বাংলায় শিল্পের জন্য বিনিয়োগও করেছেন। অদূর ভবিষ্যতে সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে টাটা গোষ্ঠীও!
বুধবার সন্ধেয় বাণিজ্য সম্মেলন থেকে বেরানোর সময় সাংবাদিকদের একথা জানান স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "টাটা সন্সের দায়িত্বে এখন যিনি রয়েছেন, সেই চন্দ্রশেখরণজির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছে। বিজিবিএসের উদ্বোধনে না আসতে পারার জন্য উনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন, তবে জানিয়েছেন, টাটা গ্রুপের টিম উনি বাংলায় পাঠাবেন। বাংলার জন্য ওরা অনেক কিছু করতে চায়।"
প্রসঙ্গত, টাটা সন্স টাটা গ্রুপেরই একটি হোল্ডিং কোম্পানি। এবং টাটা গ্রুপের কোম্পানিগুলির বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক টাটা সন্স।
বলে রাখা ভাল, বাম আমলে সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা করতে চেয়েছিলেন রতন টাটা। যদিও জমি অধিগ্রহণ ঘিরে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের সঙ্গে তৎকালীন সিপিএমের সংঘাতে শেষ পর্যন্ত বাংলা থেকে ন্যানো প্রকল্প গুটিয়ে গুজরাটে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন রতন টাটা। তারপর থেকে সুযোগ পেলেই সিঙ্গুরের প্রসঙ্গে টেনে সিপিএম-সহ বিরোধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে শিল্প বিরোধী তকমা দিতে চায়।
যদিও গত সাত বছর ধরে বাংলায় বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন করে ইতিমধ্যে ৯০ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব আনতে সক্ষম হয়েছেন বলে এদিন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এও বলেন, এর মধ্যে ১৬ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিটা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এবারেই বিনিয়োগের পরিমাণ ১২ লক্ষ কোটি টাকা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এবারের সংখ্যাটা আরও বাড়বে। আগামীকাল আরও পাঁচটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার বৈঠক রয়েছে। তা ছাড়া আগামীকাল বিভিন্ন দেশের শিল্পপতিদের সঙ্গে একাধিক মৌ চুক্তি হওয়ার কথা। তারপরই এবারের পুরো বিনিয়োগের অঙ্কটা বলা যাবে। তবে এটুকু বলতে পারি, আমি খুব স্ট্যাটিসফাই। আগামীদিনে বাংলায় হবে সারা বিশ্বের শিল্প বিনিয়োগের গন্তব্য। যা করে গেলাম আর যা করে যাচ্ছি তা একদিন বাংলার মাইল ফলক হয়ে থাকবে।"
এদিনের শিল্প সম্মেলন থেকে থাই ফুডের প্রশংসা করে আগামীদিনে থাইল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমন্ত্রণ পেয়েছেন জাপান-সহ একাধিক দেশের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমাকে অনেক দেশ আমন্ত্রণ জানিয়েছে। জাপান তো বারে বারে বলছে আপনাদের এখানে এত বিনিয়োগ করছি, একবার আসুন। কিন্তু সমস্যা হয়ে গেছে এখানে তো ১২ মাসে ১৩ পার্বণ নয়, এখন ১০০ পার্বণ। কখনও উৎসব তো কখনও দুর্যোগ, সবকিছুতেই থাকতে হয়। একবার লন্ডন গিয়েছিলাম। এখানে প্রবল বৃষ্টি পালিয়ে এলাম। আসলে পাহারাদারের মতো থাকতে হয়। তবে বাংলার স্বার্থে কিছু আমন্ত্রণ রক্ষা করা উচিত।" অর্থাৎ বাংলায় বিনিয়োগ আনতে আগামীদিনে বিদেশ পাড়ি দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপরই বিরোধীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যত দিন যাচ্ছে বাংলায় শিল্পের তত বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। যারা বলছে এক পয়সা আসেনি, আমি তো অলরেডি হিসেব দিয়ে দিলাম। সুতরাং, কী করে এসব কথা বলে। আমি বলব, সব সময় নেগেটিভ না করে রাজ্যের যেটা গর্ব সেটা নিয়ে গর্বের সাথে গর্বিত হতে হবে।"