শেষ আপডেট: 15th July 2024 13:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত মঙ্গলবার আকাশছোঁয়া সবজির দাম নিয়ে পুলিশকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ দিনের মধ্যে সবজির দাম কমাতে হবে এবং একইসঙ্গে দাম কতটা কমল তা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট জমা দিতে হবে, স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। কিন্তু এক সপ্তাহ কেটে গেলেও কলকাতার বেশ কয়েকটি বাজারে সবজির দামের খুব একটা হেরফের হয়নি। রীতিমতো একটি বাজারের সঙ্গে অন্য বাজারের আনাজের দামে বিস্তর ফারাক। এবার সরকারের নির্দেশ মেনে সবজির দাম না কমালে গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি দিল টাস্ক ফোর্স।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর কলকাতা-সহ জেলাগুলির বিভিন্ন বাজারে নজরদারি শুরু হয়েছে। অভিযানে নেমেছে টাস্ক ফোর্স। সোমবার ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারে যান টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। সেখানে দেখা যায়, অন্যান্য বাজারের তুলনায় দক্ষিণ কলকাতার ওই বাজারটিতে সমস্ত সবজি ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাঁর কারণও অকপট ব্যাখ্যা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
যদুবাবুর বাজারের এক ব্যবসায়ীর কথায়, “এখানকার ক্রেতারা ভালো মানের ‘ফ্রেস’ সবজি চান। ফলে তেমনভাবেই আমাদের আমদানি করতে হয়। আমরা যে সকল ব্যবসায়ীর থেকে সবজি কিনি তাঁরাও আমাদের থেকে বেশি দাম নেন। লাভের জন্য আমাদের দাম বাড়াতে হয়।” সেক্ষেত্রে দাম কমাতে হলে সরকারকেই পদক্ষেপ করতে হবে। বিক্রেতারা যে বড় ব্যবসায়ীদের থেকে সবজি কেনেন তাঁদের নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে বলে মত যদুবাবুর বাজারের বিক্রেতাদের।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরও বিক্রেতারা দাম না কমানোয় টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের বক্তব্য, "আমাদের কথা না শুনলে এবার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী দিনে গ্রেফতারও করা হতে পারে।" এই প্রসঙ্গে, যদুবাবুর বাজার কমিটির সেক্রেটারি ভানুদেব বিশ্বাস বলেন, "এখানে এক এক জন ব্যবসায়ী এক এক রকম দাম নিচ্ছেন। এরকম চলবে না। আমরা দাম ঠিক করে দেব। সমস্ত ব্যবসায়ীকে সেই একই দামে সবজি বিক্রি করতে হবে।"
এদিন নিউমার্কেট বাজারেও যায় টাস্ক ফোর্স। মধ্য কলকাতার ওই বাজারে প্রতি কেজি শসা ৫০ টাকা, লঙ্কা ৮০ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ৪০ টাকা, জ্যোতি আলু ৩৫ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, রসুন ১৬০ টাকা, আদা ১৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৩৫ টাকা, ঝিঙা ৬৫ টাকা, ক্যাপসিকাম ১০০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বিট ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নিউ মার্কেটেও এদিন বেশ খানিকক্ষণ ঘুরে দেখেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা।
গত ৯ জুলাই সবজির দাম বৃদ্ধি নিয়ে নবান্ন থেকে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকে প্রশাসনের লাগাতার অভিযানে কিছু সবজির দাম কমেছে ঠিকই, তবে খুব একটা হেরফের হয়নি। ক্রেতাদের অনেকের কথায়, নিজেদের লাভের অঙ্ক ঠিক রাখতে নয়া ফন্দি এঁটেছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।