দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) সফর নিয়ে আগেই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। মঙ্গলবার সুতিতে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মমতা। সেখান থেকে শহিদ জওয়ানের স্ত্রী ও ছেলের হাতে ১০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। তবে এর আগে দেখা গেছিল, ওয়াকফ ইস্যুর অশান্তির জেরে যাদের মৃত্যু হয়েছিল জেলায় সেই হরগোবিন্দ এবং চন্দন দাসের পরিবারের সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণের টাকা নেয়নি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বক্তব্য, এমন ঘটনায় বোঝা যায় একাংশ মুখ্যমন্ত্রীকে বয়কট করেছে। 

মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, অনেকেই জেলা ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু যারা আছেন তাদের সঙ্গেই তিনি দেখা করবেন, ক্ষতিপূরণ দেবেন। তবে কেউ তা না নিলে কিছু করার নেই। মঙ্গলবার সল্টলেকে মানবাধিকার কমিশনের অফিসের সামনে ধর্না-বিক্ষোভে সামিল হয়ে শুভেন্দু মমতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ''হরগোবিন্দ এবং চন্দন দাসের পরিবার সরকারের ক্ষতিপূরণের টাকা নেননি। তবে আমাদের তরফে এনজিও-র মাধ্যমে যে ১০ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছিল তা তাঁরা গ্রহণ করেছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন কারা আসল হিন্দু। আর মুখ্যমন্ত্রীর ১৪ বছরের রাজত্বে এই প্রথমবার তিনি বয়কট হয়েছেন হিন্দু সমাজের দ্বারা।''

সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ যাওয়ার পরই শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ''হিন্দুরা যাতে সমস্যার কথা বলতে না পারেন সে কারণে তাদের গ্রাম ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। আর ২টি ওয়ার্ডের যে তথ্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তা মিথ্যে। ১০ জায়গার অন্তত ৯০০ দোকান-বাড়ি ভাঙা হয়েছে।'' শুভেন্দুর কটাক্ষ, মমতা প্রশ্ন করেছেন যে, কেন তাঁকে দায়ী করা হবে। আসলে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী হিসেবে তিনি দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। 

মঙ্গলবারের কর্মসূচি থেকে লম্বা লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সাফ কথা, যে লড়াই তাঁরা শুরু করেছেন তা অনেক দূর পর্যন্ত যাবে। সকলকে টিকে থাকতে হবে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কথায়, পছন্দের লোকজনদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ সফরে গেছেন। কিন্তু তাঁরা কোনও লোক ভাড়া করেন না। গাড়ি গাড়ি করে টাকা দিয়ে লোক আসে না তাঁদের সভায়। যারা আদতে পীড়িত, অত্যাচারিত তাঁরা এই তৃণমূল সরকারের বিরোধিতায় একজোট হয়েছে। তাঁদের জন্যই বিজেপি লড়াই করছে এবং করবে। 

এদিকে মুর্শিদাবাদের ঘটনা যে আদতে বিজেপির উস্কানির জন্য হয়েছে তা বুঝিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সুতির প্রশাসনিক সভা থেকে তিনি বলেন, "বিজেপি কিংবা কোনও মৌলবাদী সংগঠনের কথা শুনে প্ররোচিত হবেন না। রাজ্যে দাঙ্গার পরিস্থিতি আমি বরদাস্ত করব না।" এরপরই এই ধরনের হিংসাকারীদের বিরুদ্ধে সকলকে একত্রিতভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। নিজস্ব স্বভাবসিদ্ধ কথায় মহিলাদের উদ্দেশে বলেন, "বাড়িতে হাতা, খুন্তি আছে তো, দাঙ্গা করতে এলে আচ্ছা করে দেবেন।"