শেষ আপডেট: 2nd December 2023 10:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আলাপ, সেখান থেকেই প্রেম। ভালবাসা অন্তরঙ্গতায় বদলে গিয়েছিল শিগগিরই। দেখা সাক্ষাৎ না হলেও প্রেমপর্বে ঘাটতি নেই, অনলাইনে চলত সেক্স চ্যাট। তাতেই আদানপ্রদান হত নগ্ন ছবি, ভিডিও। সিউড়ির মধ্যবয়সি বধূ তখনও বোঝেননি, কত বড় বিপদে পড়তে চলেছেন তিনি। সেই ছবি, ভিডিও তাঁর স্বামীকে পাঠিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চাওয়া হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। তবে শেষ রক্ষা হল না। পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে এখন শ্রীঘরে রয়েছেন অভিযুক্ত তথা বিজেপির বুথ সভাপতি অভিজিৎ দাস।
অভিজিৎ সিউড়ির করিধ্যা পঞ্চায়েতের বিজেপির বুথ সভাপতি। অল্পবয়সি যুবকের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল ওই বধূর। তাঁর স্বামী শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আর্থিকভাবে পরিবারটি বেশ স্বচ্ছল। সেকথা জেনেই ফাঁদ পেতেছিল অভিজিৎ। ৪৭ বছর বয়সি ওই বধূকে নিজের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে নেয় সে। তারপর শুরু হয় অনলাইন যৌনতা।
জানা গেছে, সেক্স চ্যাট করার সময় মহিলা বিজেপির ওই বুথ সভাপতিকে নিজের যে সমস্ত ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও পাঠাতেন তা জমিয়ে রাখত অভিজিৎ। পরকীয়া প্রেম যখন তুঙ্গে, তখনই ঝুলি থেকে বিড়াল বের করে সে। মহিলার নামধারী একটি ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে প্রেমিকার স্বামীকে ছবি এবং ভিডিওগুলি পাঠিয়ে দেয় সে। তারপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। ৫ লক্ষ টাকা না দিলেই ছবি এবং ভিডিওগুলি অনলাইনে পোস্ট করে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখায় সে।
মহিলার স্বামী সব বুঝতে পারেন। তবে অভিজিতের ফাঁদে পা না দিয়ে সোজা থানায় হাজির হন তিনি। সিউড়ি থানায় গিয়ে সবটা খুলে বলতেই অভিজিৎকে পাকড়াও করতে পাল্টা ফাঁদ পাতে পুলিশ। সিউড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরাগ ঘোষ এবং আইসি দেবাশিস ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল ওই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে মেসেজ পাঠিয়ে জানায়, দাবি মতো টাকা দেওয়া হবে তাকে। তার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে সিউড়ি সদর হাসপাতালের পিছনে আসতে বলা হয় তাকে।
প্রাথমিকভাবে রাজি হলেও পরে অভিযুক্ত জানায়, টাকা নিতে তসরকাটার জঙ্গলে দেখা করবে সে। একথা জানার পর পুলিশের একটি দল চলে যায় সিউড়ি হাসপাতালের পিছনে। অন্য একটি জঙ্গল যায় তসরকাটার জঙ্গলে। সেখান থেকেই হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় বিজেপির ওই বুথ সভাপতিকে। হাতে হাতকড়া পরিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিজেপির বীরভূম জেলার নেতারা জানিয়েছেন, অভিযুক্তের অপরাধ প্রমাণিত হলে দলের তরফে তাকে কোনও সুরক্ষা দেওয়া হবে না।