শেষ আপডেট: 12th October 2022 12:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০১৬-র ৮ নভেম্বরের কথা মনে আছে? সেদিন রাতে জাতীর উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) দেশে পাঁচশ ও হাজার টাকার নোট বাতিলের (Demonetization) কথা ঘোষণা করেছিলেন। হুলস্থুল পড়ে গিয়েছিল দেশে। টাকা তোলা আর নোট বদলের লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ গিয়েছিল বহু মানুষের।
কেন্দ্রীয় সরকারের সেই সিদ্ধান্তের ছয় বছর পূর্তির মুখে এই বিষয়ে হওয়া মামলার শুনানি শুরু হল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। বুধবার আদালত কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে বিশদ হলফনামা দাখিল করতে বলেছে। আগামী ৯ নভেম্বর অর্থাৎ নোটবন্দির ষষ্ঠ বার্ষিকী পূর্তির পরদিন মামলার শুনানি হবে।
সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে শুনানি করার সময় বুধবার বলে যে, ডিমনিটাইজেশন বা বিমুদ্রাকরণ সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের মধ্যে পড়ে। সুপ্রিম কোর্ট এই ব্যাপারে ‘লক্ষ্মণ রেখা’ সম্পর্কে সচেতন। তবে ২০১৬ সালের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তটি পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে বিষয়টি শুধুমাত্র সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের মধ্যেই পড়ে কিনা।
বিচারপতি এস এ নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে যখন কোনও সমস্যা উত্থাপিত হয়, তখন সেই ব্যাপারে আদালতের অবস্থান স্পষ্ট করা কর্তব্য। কেন্দ্রীয় সরকারের আপত্তি উড়িয়ে আদালত বলে, ওই সিদ্ধান্তের ভাল-মন্দ আদালত পর্যালোচনা করতেই পারে।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘নোটবন্দি করা হয়েছিল আইন মেনে। অর্থনীতির ক্ষতি আটকাতে ১৯৭৮ সালে জনস্বার্থে কিছু উচ্চ মূল্যের নোটের বিমুদ্রাকরণের লক্ষ্যে আইন তৈরি হয়েছিল।’
সাংবিধানিক বেঞ্চ জবাবে বলে, ‘ইস্যুটির পর্যালোচনা জরুরি। সত্যিই ২০১৬-তে নোটবন্দি জরুরি ছিল কি না।’ জবাবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘সরকারের নীতিগত বিষয়ে আদালতের সময় নষ্ট করা উচিত নয়।’
মামলাকারী বিবেক নারায়ণ শর্মার আইনজীবী শ্যাম দিভান পাল্টা সওয়ালে বলেন, ‘এটা শুনে আশ্চর্য হচ্ছি যে এই মামলাটিকে সময় নষ্টের দায়ে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। অথচ সর্বোচ্চ আদালতই মামলার গুরুত্ব বিচার করে সেটি সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে পাঠিয়েছে।’
আর এক মামলাকারীর তরফে আইনজীবী হিসাবে সওয়াল করেন, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি নোটবন্দির বিরোধিতা করে বলেন, ‘১৯৭৮ সালে যে পরিস্থিতিতে আইনটি তৈরি হয়েছিল তার সঙ্গে ২০১৬-র কোনও সাদৃশ্য ছিল না। সরকার নোটবন্দি করতে চাইলে পৃথক আইন প্রণয়ন জরুরি ছিল।’
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী মোদী নোটবন্দির সপক্ষে দাবি করেছিলেন, এরফলে দেশে কালো টাকার কারবার বন্ধ হবে, বন্ধ হবে উগ্রবাদীদের হাতে বেআইনি অর্থ পাচার। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত কোনও লক্ষ্যই পূরণ হয়নি। নোটবন্দির কোনও প্রয়োজন ছিল না। বরং এর ফলে দেশে ছোট ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর পাওয়া উপহার সামগ্রী কিনতে চান? দাম ১০০ থেকে ৫০ লাখ টাকা