শেষ আপডেট: 9th November 2023 20:07
সুভাষ দাশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
সংসারের চাকা সচল রাখতে জীবন বাজি রেখে মোহনায় কাঁকড়া ধরতে যেতেন স্বামীরা। পরে বাঘের শিকার হন। বাড়িতে ফেরে তাঁদের মৃতদেহ। নিমেষের মধ্যেই বদলে গেছিল ললিতা, দুর্গামণি, বন্যা, রাধিকাদের জীবন। ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। এই সকল ব্যাঘ্রবিধবার ও তাঁদের সন্তানের জীবনের রঙ ফিরিয়েছেন বাসন্তী হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অমল নায়েক।
তাঁদের নিয়ে এবার গোসাবা ব্লকের গোমর নদীর তীরে মথুরাখণ্ড গ্রামে করলেন বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান। নাচে-গানে জমে গিয়েছিল আসর। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্ত ব্যাঘ্রবিধবাদের নিয়ে সুন্দরবনে কাজ করে চলেছেন শিক্ষারত্ন অমল নায়েক। তাঁর উদ্যোগেই এই সব মহিলার কর্মসংস্থান হয়েছে। এই গ্রামে দুর্গাপুজোও হয়। বিসর্জনের পরে এই ব্যাঘ্রবিধবাদের মন ভার হয়ে যাওয়ায় তাঁদের আনন্দ দিতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন অমলবাবু।
তিনি জানিয়েছেন, সুন্দরবনের গহীন জঙ্গল হিসাবে পরিচিত পীরখালি। প্রায়ই সেই জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে আসে। ঠিক বিপরীতে রয়েছে এই মথুরাখণ্ড গ্রাম। জীবিকার তাগিদে এই গ্রামের পুরুষরা পীরখালির জঙ্গলের যান মাছ, কাঁকড়া, মধু, কাঠ সংগ্রহ করতে। অনেকে হাসি মুখে ফেরেন, অনেকেই আবার বাঘের হামলায় চিরতরে হারিয়ে যান। এই গ্রামে প্রায় শতাধিক স্বামীহারা মহিলা রয়েছেন। তাঁরা এখন এই ভাবেই মূলস্রোতে ফেরার চেষ্টা করছেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্র পরিচালক জয়শ্রী ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, “অমলবাবুর ডাকে সাড়া দিয়ে এমন জীবন্ত দুর্গা মায়েদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে এসে নিজেকে ধন্য মনে হয়েছে।”