শেষ আপডেট: 2nd October 2024 17:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইংরেজিতে একটা কথা আছে, ‘আউট অফ দ্য ব্লু’! যার অর্থ অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু ঘটে যাওয়া।
কংগ্রেসি রাজনীতিতে ‘বুলু দা’ বলে পরিচিত সুখেন্দুশেখর রায়কে ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাজ্যসভার প্রার্থী করেন, তখন ব্যাপারটা একপ্রকার সেরকমই ছিল। ‘আউট অফ দ্য ব্লু’ রাজ্যসভার প্রার্থী তালিকায় ঢুকে পড়েছিল বুলুর নাম।
কিন্তু বুধবার যা ঘটল তা মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়। বরং কিছুটা প্রত্যাশিত ভাবেই জাগো বাংলার শারদ সংখ্যার প্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জাগো বাংলার সদ্য প্রাক্তন সম্পাদক সুখেন্দুশেখরকে আমন্ত্রণই জানাল না তৃণমূল।
জাগো বাংলার অনুষ্ঠানে এদিন উজ্জ্বল অনুপস্থিতি রইল দুই চরিত্রের। অনিবার্য ভাবে যাঁর থাকার কথা ছিল, সেই তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না। কারণ, অভিষেক সোমবারই চিকিৎসার জন্য বিদেশে রওনা হয়েছেন। দ্বিতীয় জন হলেন, সুখেন্দুশেখর।
এ ব্যাপারে সুখেন্দুশেখর তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন যে তিনি এখন আর সম্পাদক নন, তাই যাননি। কিন্তু জাগো বাংলা-র দফতর সূত্রে খবর, সুখেন্দু শেখরকে খুব একটা ডাকাডাকিও করা হয়নি। তার কারণ পরিষ্কার। আরজি কর পর্বে সুখেন্দুশেখরের ভূমিকা নিয়ে যারপরনাই চটেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, আরজি করের ঘটনায় নিচুতলার পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যর্থতা বা ত্রুটি হয়তো কিছু ছিল। তা নিয়ে দলের মধ্যেও অনেকেরই অভিমান বা ক্ষোভ ছিল। যেমন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ছিল। কিন্তু সুখেন্দুশেখরের লাগাতার মন্তব্য কঠিন পরিস্থিতিতে দলকে বারবার বেকায়দায় ফেলেছে। বিশেষ করে সুখেন্দুশেখর এও দাবি করেছিলেন যে সিবিআইয়ের উচিত কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে জেরা করা। তা ছাড়া তথ্য ও প্রমাণ লোপাট হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন সুখেন্দুশেখর।
এই সব ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সুখেন্দুশেখরের সম্পর্ক আড়ষ্ট হয়। শেষমেশ গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাগো বাংলার সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সুখেন্দুশেখর। ইস্তফা দেওয়ার পাশাপাশি ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে উনি সোশ্যাল মাধ্যমে তিনি একথাও জানিয়েছিলেন যে ,এখন থেকে সংবাদপত্রের কোনও এডিশনেই সম্পাদক হিসেবে তাঁর নাম ব্যবহার করা যাবে না। তেমনটা হলে তার ফল ভাল হবে না হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সুখেন্দুশেখর।
তবে ঘটনা হল, সুখেন্দুশেখর এখনও তৃণমূলের সাংসদ রয়েছেন। জহর সরকারের মতো সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেননি। দলের অনেকের মতে, সুখেন্দুশেখর সম্ভবত জহর সরকারের পথে হাঁটবেন না। তিনি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন, সংসদের কাজকর্মের ব্যাপারেও সজাগ। হয়তো এভাবেই ২০২৯ পর্যন্ত কাটিয়ে দেবেন।