শেষ আপডেট: 17th March 2025 23:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দোলের দিন রাজ্যের ২৫টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছে পদ্মশিবির। ১৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নির্বাচন এখনও বাকি থাকলেও তখন থেকেই রাজ্য রাজনীতির অভ্যন্তরে অপার কৌতূহল, বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি (west bengal, state president) কে হবেন?
বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, এক ব্যক্তি একাধিক পদে থাকতে পারেন না। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রমী উদাহরণও রয়েছে। সেই সূত্রে সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) বাড়িতে বঙ্গ বিজেপির সব সাংসদদের গেট টুগেদার এবং সুকান্তকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ফুলের তোড়া তুলে দেওয়ার ছবি সামনে আসতেই নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, যে ফের রাজ্য সভাপতি হতে চলেছেন সুকান্তই!
বৈঠকে উপস্থিত বঙ্গ বিজেপির সাংসদদের একাংশও একান্ত আলাপচারিতায় তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার ওপর সুকান্ত নিজেই এ বিষয়ে জল্পনার পারদকে যেন আরও চড়িয়ে দিয়েছেন।
'রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করবেন' জানিয়েও সুকান্ত বলেন, "এই ফুলের তোড়া শুভেচ্ছারও হতে পারে, ফেয়ারওয়েলেরও হতে পারে। আপনি কীভাবে দেখবেন, তার ওপর পুরোটা নির্ভর করছে।" কাকতালীয়ভাবে বৈঠকের বিষয়ে শুভেন্দুর কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও সামনে আসেনি। স্বভাবতই, অনেকেই বিষয়টিকে দুয়ে দুয়ে চার করে দেখতে চাইছেন।
তবে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অংশের দাবি, সাংসদের অনেকেই সুকান্তকে ফের রাজ্য সভাপতি হিসেবে দেখতে চাইলেও দিল্লিতে এদিন সুকান্তর বাড়ির বৈঠকে দলের শীর্ষ কোনও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। ফলে এবিষয়ে চূড়ান্ত যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সেটা নেবেন মোদী-শাহই।
টেলিফোনে দ্য ওয়ালকে বিজেপির এক সাংসদ বললেন, "রাজ্য সভাপতির দৌড়ে আরও দুটি নাম রয়েছে। তবে আচমকা সংগঠনে বদল আনলে তার প্রভাব পড়তে পারে জেলাস্তরেও। এদিকে বছর ঘুরলেই রাজ্যের বিধানসভা ভোট। হাতে ৯ মাসও নেই। দলের একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে সুকান্তদা মোটামুটি সবাইকে নিয়ে চলতে অভ্যস্ত। তাই সবদিক বিবেচনা করে সুকান্তদাকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে।"
ভিন্ন মতও উঠে আসছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু হয় না। তাই ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত সবটাই সম্ভাব্য। হতে পারে শেষ মুহূর্তে অন্য কাউকে দায়িত্বে আনা হল!
বৈঠকে কী কী আলোচনা হল? সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও কোথাও পোস্টারও পড়েছে। বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কীভাবে সংগঠনকে বুথস্তর থেকে শক্তিশালী করে তোলা যাবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। দলের বিক্ষুদ্ধদের কীভাবে মোকাবিলা করা হবে তা নিয়েও বৈঠকে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন সাংসদরা।
সুকান্তর কথায়, "কিছু জেলায় সাংগঠনিক গোলমাল হচ্ছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কিছু লোক যারা বিজেপির সঙ্গে খাপ খাই না, তাদের সংগঠনের বাইরে রাখা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, বাংলায় শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলা।"
ফলে শীর্ষ নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত সুকান্তর হাতেই ব্যাটন তুলে দেন নাকি অন্য মুখ, সময়েই মিলবে তার সদুত্তর।